বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে ডিএনসিসি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে 'সিস্টার সিটি' গড়ে তোলার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে উত্তর সিটি। তিনি বলেন, এর ফলে ফুটপাত ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য উত্তম কার্যক্রমের মডেল ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যাবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল শেরাটনে ডিএনসিসির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।305863643_481510250239311_8057316418059004259_n

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান ও অপরাজিতা হক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশকে নিয়ে শত বছরের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। তার নির্দেশনায় আমরা ডেল্টা প্ল্যান, ভিশন ২০৪১, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি)-সহ অন্যান্য পরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করে উন্নয়ন কার্যক্রম করে যাচ্ছি। ঢাকা শহরের পরিবেশ রক্ষায় আমরা দখলকৃত খাল উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বর্জ্য অপসারণ করে খালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করেছি। সবুজায়নের লক্ষ্যে ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকায় বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চব্বিশটি পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। স্মার্ট এলইডি বাতি লাগানো হয়েছে।'

মেয়র আরও বলেন, 'বর্তমান বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে ডিএনসিসি ডিজিটাল সেবা প্রদানে গুরুত্বারোপ করছে। জনগণের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসি অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করছে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে আর সিটি করপোরেশনে আসতে হয় না। এছাড়া যেকোনও ব্যক্তি ঘরে বসেই সবার ঢাকা অ্যাপের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছে।'

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, 'ঢাকা শহরে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে একটি আধুনিক ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলতে কাজ করছি। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় ডিএনসিসি এলাকাতেই বেশিরভাগ দূতাবাস। বাংলাদেশে নিযুক্ত অনেক দেশের রাষ্ট্রদূত এখানে থাকেন। এছাড়াও ডিএনসিসি এলাকায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও আছেন। এই শহরের উন্নয়নে আপনাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ চাই। আপনাদের শহরগুলোর সফল ও উত্তম কার্যক্রমগুলো ঢাকায় প্রয়োগ করতে চাই।'

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের দক্ষ নেতৃত্বে ও পরিচালনায় সবগুলো সিটি করপোরেশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক কম। বিগত সময়ের তুলনায়ও মশা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপের ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।'

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্যে বলেন, 'ডিএনসিসি অনেকগুলো পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন করে ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা ও মানসিক বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি স্থানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম করেছে যা সত্যি প্রশংসনীয়। আশা করছি দুই মেয়রের নেতৃত্বে ঢাকা একটি দূষণমুক্ত পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে উঠবে।'

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, 'আইনে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে অনেকগুলো বিষয়ে ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। মেয়র ও কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে গঠিত সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী ক্ষমতাগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে নগরবাসী কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবে এবং একটি সুস্থ সুন্দর শহর নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'

অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও স্থানীয় কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।