রাজধানীর কাওরান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৫ এর কার্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। গত ২৬ সেপ্টেম্বর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষের ছাদের একাংশ খসে পড়ে। আর এর পরেরদিন খসে পড়ে তার সহকারীর কক্ষের ছাদের পলেস্তারার বড় অংশ। কিন্তু এ দুটি কক্ষ বাদে ভবনটির অন্যান্য কক্ষে এখনও সেবাদান চলছে।
কাওরান বাজারে কাঁচামালের আড়ত ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত এ কার্যালয়টি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ছাদ ধসের কয়েক দিনেও বিকল্প জায়গা না খুঁজে ঝুঁকি ও আতঙ্ক নিয়েই সেবা দান করে যাচ্ছেন তারা। এ ভবনে প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন। এছাড়াও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জম্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেবা নেওয়ার জন্য এ ভবনে আসেন।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষ ও তার সহকারীর কক্ষে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহম্মেদ এখন নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে বসেন। তার সহকারী মফিদুল ইসলামকে তার কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এছাড়াও সহকারী হিসাব রক্ষক, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর কর্মকর্তা ও গুদাম ঘরসহ অন্যান্য কক্ষের ছাদে পলেস্তারা ভেঙে বিপদজনকভাবে ঝুলে থাকলেও এসব কক্ষে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অবস্থান করছেন ও সেবা প্রার্থীরা ঢুকছেন। দুর্বল এসব ছাদে ঘুরতে দেখা যায় বৈদ্যুতিক পাখাও।
জানা যায়, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কাওরান বাজারের ওই আড়ত ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। এর সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটির মালিকানাধীন আরও ১১টি মার্কেট ভবনকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে কয়েকটি ভবন পুরোপুরি ভেঙে ফেলার এবং কয়েকটি রেট্রোফিটিংয়ের (নির্মিত ভবনের সক্ষমতা বাড়ানো) সুপারিশ দেয় বুয়েট। বিশেষজ্ঞরা জরুরি ভিত্তিতে ভবনগুলোর ভার কমাতে বলেন। সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের বাজার শাখার তালিকায়ও ওই মার্কেট ভবনকে পরিত্যক্ত দেখানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভয়ের কথা আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। আমাদের মাথায় পড়লে তাও এক রকম, আমার আশঙ্কা কোনদিন যেন আমাদের কোন সেবাপ্রার্থীর মাথায় ভেঙে পড়ে।’
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘এ কার্যালয়ের সেবাগুলো আমরা আমাদের যে অন্যান্য স্থাপনা আছে সেখানে স্থানান্তরের চেষ্টা করছি। বিকল্প স্থান কোথায় হতে পারে তা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। আমাদের কয়েকটি প্রস্তাবনা রয়েছে। একটি হলো মোহাম্মদপুরে আমাদের একটি অফিস। র্যাব সেটা ব্যবহার করতো। সেটি তারা খালি করে দেবে। আমাদের সূচনা কমিউনিটি সেন্টার আছে। এছাড়াও আমাদের মিরপুর-২ এর আঞ্চলিক কার্যালয় আমরা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি। এ জন্য এটিও খালি হবে।’