ঢাকার যানজট নিরসনে কাঁচপুর ও কেরানীগঞ্জে হবে টার্মিনাল

বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো রাজধানীর ভেতরে প্রবেশ করায় যানজট বাড়ে বহুগুণ। তাই এবার শহরের বাইরে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ও কেরানীগঞ্জের বাঘাইড় এলাকায় তৈরি হবে আন্তজেলা বাস ও শহরের বাসের জন্য টার্মিনাল। ইতিমধ্যে এটি করার জন্য নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুটি টার্মিনালের নকশা প্রণয়ন করার পরামর্শক নিয়োগের আবেদন গ্রহণ শুরু করেছেন তারা। পরামর্শকের জন্য তিন মাস এবং বিভিন্ন সমীক্ষা, সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়ন করতে আরও ছয় মাস সময় লাগতে পারে।

ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের গণপরিবহন শৃঙ্খলায় আনতে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল করার জন্য ঢাকা জেলার চারটি জায়গা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে সাভারের হেমায়েতপুরে ও ধউর এলাকার গ্রাম ভাটুলিয়ায় আরও দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, ২০২১ সালে এ কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম এ জায়গাগুলো পরিদর্শন করে নিজেরাই নির্বাচন করেন।

এ কাজে নিয়োজিত ডিএসসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব খাদেম জানিয়েছেন,  কাঁচপুরের টার্মিনাল নির্মাণের জায়গাটি সাড়ে ১৫ একরের ও বাঘাইড়ের জায়গাটি ৩৩ একরের।

তিনি বলেন, ‘কাঁচপুরের জায়গাটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের, তাই এখানে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করার জন্য আমাদের জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে বাঘাইড়ের ৩৩ একর জায়গা ব্যক্তিমালিকানা হওয়ায় এটি আমাদের অধিগ্রহণ করা হবে। এর জন্য কাজ চলমান আছে।’

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজের বিবরণীতে বলা আছে, এ দুটি জায়গায় শুধু বাস টার্মিনালই নয়, এখানে বাসের ডিপো, সংযোগ সড়ক, পার্কিং, নাগরিক সুবিধাদি, পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা, টিকিট কাউন্টার ইত্যাদি জিনিস রেখে সম্ভাব্যতা যাচাই, প্রাথমিক ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন ও উন্নয়নকাজে খরচ নির্ধারণ।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে যানবাহন ও যাত্রীর প্রাক্কলনের ওপর ভিত্তি করে শহরের বাস ও জেলার বাসের জন্য আলাদা ঢোকা ও বের হওয়ার রাস্তার, ডিপো, যাত্রীদের চলাচলের রাস্তা ও অন্যান্য সুবিধাদির নকশা প্রণয়নের কাজ করতে হবে।

রাজিব খাদেম বলেন, ‘নকশা প্রণয়নের কাজ হয়ে গেলে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমরা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের কাছে উপস্থাপন করবো। পাশাপাশি আমাদের জমি অধিগ্রহণের কাজ ও চলবে।’

তিনি জানিয়েছেন, পরমার্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বহন করলেও ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের খরচ সরকার বহন করবে।

ইনস্টিটিউট ফর প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘এ টার্মিনাল দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরের যানজট কমবে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’