ছাদ-কৃষকদের পুরস্কার দেওয়া হবে: ডিএনসিসি মেয়র

বাড়ির ছাদে কৃষি উৎপাদনে অংশ নিলে ওয়ার্ডভিত্তিক ছাদ-কৃষকদের জন্য পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) নগর ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী ছাদকৃষি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ ঘোষণা দেন। 

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঢাকা শহরে ছাদকৃষির মাধ্যমে কৃষিবিপ্লব ঘটাতে চাই। ঢাকায় বাগান বা কৃষির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাবে না। অতএব, ছাদই কৃষির জন্য একটি বড় ক্ষেত্র হতে পারে। সবাই যেন ছাদকৃষি করে, সেজন্য আমরা সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

তিনি বলেন,  ‘ছাদকৃষিতে ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক পুরস্কার দেওয়া হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ছাদকৃষির ফল ও সবজি নিয়ে একটা মেলার আয়োজন করা হবে। সঠিকভাবে নিয়ম মেনে যারা ছাদকৃষি করবেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’

ডিএনসিসির কাউন্সিলররা কর্মশালায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন— এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদি ফেলে রাখা না হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে আমাদের প্রতিটি জায়গায় চাষাবাদ কর‍তে হবে। কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিরা তাদের ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে কাজ করলে সফলতা আসবে। কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নিয়ে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে। জনগণকে অনুপ্রাণিত করতে হবে।’

এসময় কাউন্সিলরদের নিজ নিজ বাড়িতে ছাদকৃষি করার আহ্বান জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

আতিকুল ইসলাম  আরও  বলেন, ‘ছাদ বাগানেই মশার জন্ম হয়, কথাটি সঠিক নয়। বরং নিয়ম মেনে ছাদ বাগান করলে ছাদে মশা জন্মানো বন্ধ করা সম্ভব। বাগান না করলে দেখা যায়— অনেক ছাদে পানি জমে থাকে, অব্যবহৃত জিনিসপত্র পড়ে থাকে। এর ফলে সেখানে এডিসের লার্ভা জন্মায়। অতএব, ছাদবাগান করার মাধ্যমেই মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’

ডিএনসিসি মেয়র এসময় বলেন, ‘ছাদবাগানের মাধ্যমে শহরের অক্সিজেন হাব তৈরি করা হবে। ছাদে বাগান করলে ভবনের এবং শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়। সতেজ শাক-সবজি খাওয়ারও সুযোগ সৃষ্টি হয়।’

অনুষ্ঠানে কৃষি উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তরুণদেরকে ছাদকৃষি এবং চাষাবাদ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। তাদের সচেতন করতে হবে। ছাদকৃষির অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। ছাদকৃষি করলে সতেজ সবজি ও ফল পাবেন। আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। ছাদবাগানে বসে গল্প করার মাধ্যমে পরিবারের সবার মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় হয়। এছাড়া ভবনের টপ ফ্লোরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ ড. মো. মেহেদি মাসুদ কাউন্সিলরদের সঠিকভাবে ছাদকৃষির বিষয়ে হাতে- কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও  উপস্থিত ছিলেন— জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর জ্যাভিয়ার বুয়ান, ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক প্রমুখ।