‘ঢাকা মেয়র কাপ’ শুরু হচ্ছে ৫ জানুয়ারি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আয়োজনে আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে তৃতীয়বারের মতো শুরু হচ্ছে ‘ঢাকা মেয়র কাপ আন্ত-ওয়ার্ড ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩’। এবারের আয়োজনে ফুটবল, ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন; এই তিনটি খেলার প্রতিযোগিতা হবে।

রবিবার (২ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলিস্তানে নগরভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, ‘বিগত দুইবারের মতো এবারের আয়োজনেও আমরা করপোরেশনের আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ডকে সম্পৃক্ত করছি। কিন্তু এবারের আয়োজনের পরিসর ও ব্যাপকতা আরও বাড়ানো হয়েছে। ফুটবল ও ক্রিকেটের পাশাপাশি তৃতীয় ঢাকা মেয়র কাপ আন্ত-ওয়ার্ড ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আমরা ব্যাডমিন্টন খেলাকে সম্পৃক্ত করেছি।’

তিনি জানান, দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ড থেকে ৬৪টি দল ফুটবল খেলায়, ৫১টি দল ক্রিকেট খেলায় এবং ৬৪টি দল ব্যাডমিন্টন খেলায় অংশ নেবে। পুরো প্রতিযোগিতাটি ‘নক আউট’ পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হবে।

আগামী ৫ জানুয়ারি কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে তৃতীয় ‘ঢাকা মেয়র কাপ আন্ত-ওয়ার্ড ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও ফুটবলের উদ্বোধনী খেলা অনুষ্ঠিত হবে। একই মাঠে আগামী মাসে ফুটবল খেলার সমাপনী অনুষ্ঠান ও সমাপনী খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৩ জানুয়ারি গোলাপবাগ মাঠে ক্রিকেট এবং বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের ইনডোর স্ট্যাডিয়ামে ব্যাডমিন্টন খেলার উদ্বোধন হবে।

এবার মোট ৯টি মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার সব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের ইনডোর স্টেডিয়ামে ও পাঁচটি ওয়ার্ডের উন্মুক্ত স্থানে ব্যাডমিন্টন খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

ক্রিকেট ও ফুটবল উভয় ক্ষেত্রেই বিজয়ী দলের জন্য ৭ লাখ টাকা এবং বিজিত (রানার-আপ) দলের জন্য ৫ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। একইসনঙ্গে ব্যাডমিন্টনে বিজয়ী দলকে ৩ লাখ টাকা এবং রানার-আপ দলকে ২ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। গতবারের মতো এবারও টেপ টেনিস বলের বদলে ‘কাঠের বলে’ ক্রিকেট ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরাবরের মতোই আতশবাজির বর্ণিল প্রদর্শনী থাকছে। বর্ণিল আলোকচ্ছটার আবহে থাকছে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী ও ডি রকস্টার খ্যাত গায়ক শুভর সঙ্গীত পরিবেশনা।

মেয়র তাপস বলেন, ‘এক সময় ঢাকার তরুণ-যুবকেরা শহরের মাঠে-ময়দানে, অলি-গলিতে খেলাধুলা করে এ দেশের ফুটবল-ক্রিকেট খেলাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে সেই চিত্র অনেকটাই ফ্যাকাসে। এর অন্যতম কারণ ঢাকা শহরে খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত মাঠের অভাব।’  

তিনি বলেন, ‘আমরা খেলাধুলায় ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিগত দুই বছরে আমরা স্বার্থান্বেষী মহলের দখলে থাকা চারটি জমি উদ্ধার করেছি। দুই বছরে আমরা ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে লক্ষ্মীবাজার খেলার মাঠ, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে আলমগঞ্জ খেলার মাঠ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বকশীবাজার কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে টিকাটুলি খেলার মাঠের উন্নয়ন করেছি। ইতোমধ্যে সেসব মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে আমরা একটি জায়গা উদ্ধার করেছি। সেখানে চন্দনকোঠা খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’    

মেয়র বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পের আওতায় আমরা ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাংলাদেশ মাঠ এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে মেয়র সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠের উন্নয়ন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাসাবো সবুজ বলয় (বাসাবো বালুর মাঠ) এবং ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ধুপখোলা খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে মেন্দিপুর খেলার মাঠ এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাসাবো ভূঁইয়ার মাঠের উন্নয়নে আমাদের কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে।’