বায়তুল মোকাররমে ইফতারে বাড়ছে মুসল্লির সংখ্যা

রমজান মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার আজ। বায়তুল মোকাররম মসজিদে ইফতার করতে আসা মুসল্লিদের সমাগম বাড়ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে জাতীয় এই মসজিদ। হাজারো মানুষের সঙ্গে একত্রে ইফতার করতে চলে আসছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয় প্রথম রমজান। আজ রমজানের দ্বিতীয় শুক্রবার (৩১ মার্চ)। সরেজমিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মিলনমেলা।

মুসল্লি কমিটির সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মানিক বলেন, আমাদের এখানে দিন দিন লোক বাড়ছে। আজ ২ হাজার ২০০ লোক অংশ নিয়েছে। কিন্তু আয়োজন ছিল দুই হাজার জনের। সবাইকে অনুরোধ করেছি যাতে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খায়।

তিনিআরও বলেন, আমরা বসুন্ধরা গ্রুপকে জানিয়েছি, যাতে আরও এক হাজার জনের ইফতারি বেশি দেয়। এখানে সব শ্রেণির লোকই আসে। মসজিদের পেশ ইমাম ইফতারের আগে মোনাজাত করেন। তাই অনেকে মোনাজাতের জন্যও এখানে ইফতার করতে আসেন।

ইফতারির প্রতিটি বাক্সের জন্য ১০৫ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়। ইফতারির মধ্যে থাকে খেজুর, কলা, ছোলা, মুড়ি, বেগুনি, পেঁয়াজু, জিলাপি ও পানি।

এই আয়োজন পুরো রমজান মাস চলবে। দুই বছর ধরে আমরা আয়োজন করে আসছি। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতেও করবো।

তাবলিগ জামাত ওলামা একরামের পক্ষ থেকেও ইফতার করানো হয় বাইতুল মোকাররম মসজিদে। সংগঠনটির ইফতারের দায়িত্বে আছেন মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, সাত থেকে আট বছর ধরে এ আয়োজন করে আসছে তাবলিগ জামাত।

জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের ইফতারে সব শ্রেণির মানুষই আসে। আমার দেখামতে মধ্যম শ্রেণির কর্মজীবী মানুষ বেশি আসছেন। প্রতি ছয় জনের জন্য একটি প্লেটে একসঙ্গে ইফতারি দেওয়া হয়। এ রকম ৭০ থেকে ৭৫টি প্লেট তৈরি করি। প্রতিটি প্লেটে থাকে খেজুর, জিলাপি, কলা, শসা, পেয়ারা, ছোলা, মুড়ি, আলুর চপ, বেগুনি, পেঁয়াজু, পুরি ও শরবত। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ইফতারির আয়োজন করতে হয়।

জসিম আরও বলেন, আমরা নিজেদের অর্থে ইফতারের আয়োজন করি। এটা সবার জন্য উন্মুক্ত। মূলত আল্লাহকে খুশি করার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। আমরা নিজেরাই টাকা দিই, নিজেরাই পরিশ্রম করি।

নেটওয়ার্ক কোম্পানিতে কাজ করেন তরিকুল ইসলাম। সহকর্মীদের নিয়ে তিনি ইফতার করতে আসেন বাইতুল মোকাররম মসজিদে। তিনি বলেন, রমজানের শুরু থেকেই বায়তুল মোকাররমে ইফতার করছি আমরা। শুরু থেকে মুসল্লি কমিটির দেওয়া ইফতার করতাম। দুদিন ধরে তাবলিগ জামাতের ইফতার করছি।

কেন এখানে আসেন, জানতে চাইলে তরিকুল বলেন, ওখানে আলাদা বক্সে ইফতারি দেয়। মাঝেমধ্যে খাবার বেশি হলে তখন সেগুলো ফেলে দিতে হয়। এটা ভালো লাগে না। এখানে সবাই মিলে খেলে খাবার শেষ হয়ে যায়, ফেলে দেওয়া লাগে না।

মোখলেসুর রহমান নামের এক মুসল্লি বলেন, আলাদা ইফতার করার থেকে একসঙ্গে ইফতার করা বেশি আনন্দের। তাই এখানে ইফতার করার জন্য চলে আসি।

সেলুনে কাজ করেন মোহাম্মদ নাঈম। তিনি বলেন, প্রথম রমজান থেকে বাইতুল মোকাররম মসজিদে ইফতার করি। কখনও মুসল্লি কমিটির, কখনও তবলিগ জামাতের ইফতার করি। এখানে এলে অনেক মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতার করা যায়। এটা খুব ভালো লাগে আমার।