রাজউকের ৩০ হাজার নথি গায়েব, কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নথি গায়েবের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আসার পর তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দুদক।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের পরিচালক (সিস্টেম অ্যানালিস্ট) মো. রাজিব হাসানের নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন দুদকের উপপরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত ও সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান।

দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, ‘কমিটি নথি গায়েবের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। আমরা কমিটি গঠনের বিষয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। আশা করছি চলতি সপ্তাহে প্রতিবেদনটির ওপর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে। এরপর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।’

এর আগে গত ২ জানুয়ারি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে রাজউকের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত। এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একই দিন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

গত ২ জানুয়ারি প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। রবিবার মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ-১) মো. অলিউল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে রাজউককে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এই কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নথি গায়েবের ঘটনায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, তদন্ত কমিটি তা বের করবে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় কারা জড়িত কিংবা কোনও কারিগরি ত্রুটি ছিল কি না, সেটি অনুসন্ধান করবে কমিটি। পাশাপাশি কেউ ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেটিও দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, রাজউকের সার্ভার থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদনসংক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের আবেদনের নথিপত্র গত ৬ ডিসেম্বর গায়েব হয়ে যায়।