রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই, তবুও রাজধানীতে যান চলাচল কম

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে রাজধানীতে যানবাহনের সংখ্যা ছিল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। গত চার দফা অবরোধ চলাকালীন রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কই ছিল ফাঁকা। তবে অবরোধ ছাড়াও পঞ্চমবারের মতো অবরোধ কর্মসূচির আগের দিন মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পূর্ণ কর্মদিবসেও সড়ক ছিল যানজটমুক্ত। সকাল থেকে রাজধানীর কিছু পয়েন্টে যান চলাচলে ধীরগতি থাকলেও গাড়ির চাপ কম ছিল বেশিরভাগ সড়কেই।

আজ সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, মোড়ে মোড়ে অফিসগামী মানুষের ভিড়। সেই তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম। অনেকে বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও গন্তব্যের বাসের দেখা পাচ্ছেন না। এ জন্য অনেকে পায়ে হেঁটে, রিকশায় বা বাইকে গন্তব্যের দিকে রওনা দিচ্ছেন। তবে যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন, কোনও রকম ঝামেলা ছাড়াই তাদের চলাচল করতে দেখা গেছে।

বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশি। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

সকাল ৯টার পর বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেট এলাকা ঘুরে তেমন যানজট দেখা যায়নি। কিছু কিছু পয়েন্টে সিগনাল ছাড়া সড়কে স্বাভাবিক গতিতেই চলছিল গাড়ি। তবে কিছুটা যানজট ছিল কাওরান বাজার মোড় হয়ে বাংলামোটর ও পান্থপথের দিকে। স্বাভাবিক গতিতে যান চলাচল কর‍তে দেখা গেছে শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়েও। তবে পল্টন ও গুলিস্তানে যান চলাচলে কিছুটা ধীরগতি ছিল।

ফার্মগেটে বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী তানভীর হোসেন। তার মতে, যানজট হলেও সমস্যা, আবার গাড়ি কম থাকলেও সমস্যা। তিনি বলেন, ‘মালিবাগে অফিস। প্রতিদিন বাসেই যাই। অবরোধের জন্য গাড়ি এমনিতেই কমে গেছে। আজ অবরোধ নেই। তারপর এ লাইনের বাস কম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি।’

আজ অবরোধ না থাকলেও সড়কে গাড়ির চাপ কম। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

মৎস্যভবন মোড়ে আরেক যাত্রী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমি অল্প আয়ের মানুষ, সবসময় বাসে যাতায়াত করি। দেশে কিছু হলেই গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় গাড়ি কম থাকলে ভাড়া বেশি দিতে হয়। গত কয়েকদিন ধরে রাস্তায় বাসের সংখ্যা কম।’

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ গেটের পাশে সচিবালয় এলাকায় সকাল থেকে দায়িত্ব পানল করছিলেন ট্রাফিক সদস্য দিলীপ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘সড়কে চলাচল করা অধিকাংশ গাড়ি ব্যক্তিগত। গণপরিবহনের সংখ্যা কম। আজ কর্মদিবস হওয়ায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বিগত অবরোধের দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে আগের স্বাভাবিক দিনগুলোর মতো না।’

সকাল থেকে রাজধানীর কিছু পয়েন্টে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রমনা ট্রাফিক বিভাগের শাহবাগ জোনের ট্রাফিক পরিদর্শ (টিআই) সাগর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে কর্মদিবসে রাস্তায় গাড়ির যে চাপ থাকে, সেটা এখন দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে বাসের সংখ্যা কম। এ জন্য সড়ক কিছুটা ফাঁকা। অনেকে আতঙ্কে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন না। তাছাড়া এখন মেট্রোরেল চালু হয়েছে। অনেকে বাসের বদলে মেট্রোরেলে চড়ে গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন। সে জন্য সড়কেও গাড়ির চাপ কমেছে।’