শেষ দিনে প্রায় যাত্রীশূন্য গাবতলী বাস টার্মিনাল

আনন্দঘন পরিবেশে আগামীকাল সারা দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। অথচ ঈদযাত্রার শেষ দিনে তেমন যাত্রী নেই গাবতলী বাস টার্মিনাল। নেই ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ। গত দুই দিনে কিছুটা চাপ থাকলেও আজ কাউন্টার প্রায় যাত্রীশূন্য। কাউন্টারের কর্মীরা অবসর বসে আছেন। এদিকে যাত্রীর অভাবে টার্মিনালে বিভিন্ন কোম্পানির বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে, কেবল শিডিউলে থাকা গাড়িগুলো ছাড়া হচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা আশানুরূপ যাত্রী পাচ্ছেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন টার্মিনালে যাত্রী ভাগ হয়ে গেছে। তাছাড়া বিকল্প উপায়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ায় যাত্রী কমে গেছে বলে মনে করেন গাবতলী কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতারা।

দু-একজন যাত্রী আসছেন, টিকিটি কাটছেন। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

রাবেয়া পরিবহনের কর্মী মাহবুব বলেন, ‘যাত্রী অনেক কমে গেছে। গত দুই দিন যাত্রী ছিল মোটামুটি। আজ একেবারে নাই বললেই চলে।’

কোম্পানির নাম টিকিয়ে রাখতে বাস ছাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে টিকে থাকতে এখনও বাস ছাড়ছি। এছাড়া স্টাফদেরও খরচ আছে। বাস বসিয়ে রেখে লাভ হবে না।’

আরেক কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ায় যাত্রী ভাগ হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলে যেতে সায়েদাবাদের দিকে মানুষ ভিড় করছে। উত্তরবঙ্গের যাত্রী আমরা কিছুটা পাই। এছাড়া লোকাল বাসে, নানা উপায়ে মানুষ গ্রামে যাচ্ছে। তারা আগে গাবতলী ছাড়া যেতো না।’

বন্ধ রাখা হয়েছে কিছু কিছু কাউন্টার। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

সেবা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিকালে আমাদের দুই-তিনটা বাস আছে। বাসের কয়েকটা সিট এখনও অবিক্রীত। এবার যেহেতু লম্বা ছুটি, যাত্রীরা আগেই বাড়ি চলে গেছে। অতিরিক্ত যাত্রী না হওয়ায় আমরা ট্রিপের বাইরে নতুন কোনও বাস নামাতে পারিনি।’ তবে বিকালে অল্প দূরত্বের যাত্রী কিছুটা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

এদিকে জনপ্রিয় বাসগুলোর টিকিট না থাকলেও শিডিউল অনুযায়ী বাস ছাড়ছে।

হানিফ এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির বলেন, ‘আজ যাত্রীদের চাপ নেই। শিডিউল অনুযায়ী আমাদের গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে।’

অবসর সময় কাটাচ্ছেন কাউন্টারের কর্মীরা। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

এদিকে টার্মিনালে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় পরিবার-পরিজনের অনেকে আগেই ঢাকা ছেড়েছেন। যাদের কাজ ছিল, তারা আজ ঢাকা ছাড়ছেন। শেষ মুহূর্তে ভালো বাসের টিকিট না পাওয়া গেলেও অন্যান্য বাসের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ভাড়া বেশি চাইলেও এখন যাত্রী না থাকায় নির্ধারিত ভাড়াতেই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে

পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন ইনামুল। তিনি বলেন, ‘যাত্রী একেবারে কম দেখছি টার্মিনালে। তবে যে বাসে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম, সেটার টিকিট নাকি অনেক আগেই শেষ। এখন কিছু বাসের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ভালো আসনই পেয়েছি।’