ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন-এর সম্পাদক জাফর সোবহানের সঞ্চালনায় এ সেশনে অংশ নেন কয়েকজন উন্নয়নকর্মী, গবেষক ও সাংবাদিক।
সেশনে আলোচনার সূত্রপাত করেন জাফর সোবহান। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের পক্ষ থেকে রাখাইনে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার কথা বলা হলেও মিয়ানমার সরকার তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তাহলে দেশটিতে আসলে কী ধরনের ঘটনা ঘটেছে?’ জবাবে লেখক-গবেষক আজিম ইব্রাহিম বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে আসলেই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক পক্ষ থেকে চাপ এড়াতে মিয়ানমার সরকার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।’
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সাহায্য পর্যাপ্ত কিনা, সে বিষয়ে জানতে চাইলে উন্নয়নকর্মী আমিরা হক বলেন, ‘সব সাহায্য সংস্থা এগিয়ে এলেও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না চীন ও রাশিয়ার অনীহার কারণে। এছাড়া আসিয়ান সম্মেলনও কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি। তবে এখন মানবিক সহায়তা সবচেয়ে বেশি দরকার রাখাইনে। কারণ, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সাহায্য পেলেও রাখাইনে কোনও মানবাধিকারকর্মীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’
গবেষক মাইকেল ভ্যাটিকিওটিস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট শুধু মানবিক সংকট নয়, সীমান্তবর্তী আঞ্চলিক সংকটও। রাখাইনে সহিংসতা চলমান। এটি নিয়ন্ত্রণ না করলে এই সহিংসতা সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেকটা ইন্দো-পাক সীমান্ত সমস্যার মতো হতে পারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তেও।’
সংবাদকর্মী জেফ কিংসটন এ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় চীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই আঞ্চলিক সমস্যা মোকাবিলায় তাদের এগিয়ে আসা উচিত।’
আলোচনার মাঝামাঝি পর্যায়ে কক্সবাজারের কুতুপালং থেকে এসে সরাসরি যোগ দেন উন্নয়নকর্মী জাস্টিন রোল্যাট। তিনি কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গাদের শরণার্থী পরিস্থিতির ভয়াবহ বিবরণ দেন। তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন উন্নয়নকর্মীরা। জীবনধারণের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছে সাহায্য সংস্থাগুলো। তবু মানবেতর জীবনযাপন করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।’
এরপর প্রশ্ন-উত্তর পর্বে দর্শক-শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আলোচকরা।