ইভিএমে ভোটের ফল পাল্টে যেকোনও দিকে নিয়ে যেতে পারে ইসি: সুজন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ভোটগ্রহণে এটি দুর্বল পদ্ধতি মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তার আশঙ্কা, ‘ইভিএম যেহেতু নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে আছে, তাই তারা ভোটের ফল পাল্টে যেকোনও দিকে নিয়ে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) নাসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন নিয়ে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তিনি। 

সুজনের দাবি, নাসিক নির্বাচনের প্রার্থীরা হলফনামায় অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কার স্বার্থে কমিশন কাজ করছে প্রশ্ন তুলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘প্রার্থীদের আয়কর বিবরণীর তথ্য প্রকাশ না করে এবং অসম্পূর্ণ হলফনামা প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ভোটারদের বঞ্চিত করছে। অনেকে করের প্রত্যয়নপত্র দিয়েও পার পেয়ে গেছেন। কিন্তু এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন হয় এদিকে নজরই দিচ্ছে না কিংবা দায়সারা গোছের কাজ করছে। মানুষকে তথ্য জানানো তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।’

বদিউল আলম মজুমদারের মতে, ‘হলফনামায় যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিস্তারিত নয়। হলফনামার ছকও সঠিক নয়। এতে পরিবর্তন আনতে হবে। হলফনামাগুলো অত্যন্ত দুর্বল। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা। তথ্য গোপন করলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা। এবারের নির্বাচনে অনেক প্রার্থীই অনেক তথ্য দেননি। এগুলো অসম্পূর্ণ। এতে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার কথা।’

নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার বক্তব্যের জবাবে সুজন সম্পাদকের অভিমত, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সিইসির বক্তব্য বোধগম্য নয়। একজন প্রার্থী নিজের নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতারের অভিযোগ করেছেন।, কিন্তু ইসির ভূমিকা নেই।’

সুজন সম্পাদকের দৃষ্টিতে, নারায়ণগঞ্জে অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তার আশা, এবারের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে।

আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এবার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে ১৮৯ জন প্রার্থী।

সুজন জানায়, ইসি’র ওয়েবসাইটে তিন প্রার্থীর তথ্য নেই। তাই ১৮৬ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন।

নাসিক প্রার্থীদের তথ্য তুলে ধরেন সুজন সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিশ্লেষণ করে সুজন বলছে, এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ী প্রার্থীদের প্রাধান্য বেশি। তারা সম্পদের যে তথ্য দিয়েছেন তা প্রকৃত চিত্র নয়।

সুজন কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন সুজন সহ-সভাপতি হামিদা হোসেন এবং সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন ও ড. শাহনাজ হুদা।