সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউপি নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত

সীইউপি নির্বাচন-২০১৬মানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার এ খবর পৌঁছানোর পরপরই সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী নবিদুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান সোপ্তিক আহম্মেদ মিঠু মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা সয়দাবাদ ইউনিয়নের কড্ডায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দফায়-দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে কড্ডায় বর্তমান চেয়ারম্যান সোপ্তিক আহম্মেদ মিঠুর অফিস, বাড়িঘর এবং নিজ ভবনে একটি হাসপাতাল ভাঙচুরসহ মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে সদর ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। উভয়পক্ষের সংর্ঘষ এবং পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান সোপ্তিক আহম্মেদ মিঠু জানান, সয়দাবাদ ইউনিয়নের সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বিরোধ ও সমস্যা রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ইউনিয়নবাসীর পক্ষে পরিষদের সকল সদস্য রেজুলেশন করে সম্প্রতি উচ্চ আদালত বরাবর রিট করা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর বৃহস্পতিবার সকালে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে আসে। সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্বাচন কমিশন থেকে তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী নবিদুল ইসলাম ও তার ভাই মমিন মেম্বার সংঘবদ্ধ হয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে বাড়িঘর, আমার বিল্ডিং এ ভাড়া দেওয়া একটি হাসপাতাল ও অফিস ভাঙচুরসহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় আমার বেশ ক’জন সমর্থক আহত হন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নবিদুল ইসলাম বলেন, মিঠু চেয়ারম্যান কারসাজি করে আদালতে  রিট করায় নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় বিক্ষুব্ধ লোকজন ও ইউনিয়নবাসী তার বাসভবন ঘেরাও করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে তার লোকজনের সংঘর্ষ হয়। মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. জয়নাল আবেদীন ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্রেনজন চাম্বুগং বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে একটি আদেশ ফ্যাক্স ও ই-মেইলযোগে আসে। আদেশে সীমানা নিয়ে জটিলতায় উচ্চ আদালতে মিঠু চেয়ারম্যানের রিটের কারণে সয়দাবাদ ইউনিয়নের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ লোকজন মহাসড়ক অবরোধ ও বাড়িঘর ভাঙচুর করলেও পুলিশ ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক রকিবুল ইসলাম ও হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, সদর থানা পুলিশ ঘটনার মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যেই মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

/বিটি/এমএনএইচ/