গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত, দুর্ভোগ

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে কিছুটা এগোচ্ছে। এর প্রভাবে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমে এসেছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গতকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি আজ (৫ ডিসেম্বর) বেশ কিছুটা বেড়েছে। ফলে দিনভর বৃষ্টিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ রাতেও এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।

এদিকে সাগর উত্তাল থাকায় আগের মতোই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি সকালে ৯৫৫ কিলোমিটার দূরে ছিল, এখন তা ৭৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, এখন তা আছে ৭৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে; মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৭৯০ কিলোমিটার, এখন ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৮১০ কিলোমিটার, এখন তা ৬০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।

গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে আগের মতোই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার সব নদীবন্দরকে ১ নম্বর  সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, নিম্নচাপের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এদিকে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।261356916_596702984882996_4613720151422345837_n