‘অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সহজ হবে’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সহজতর হবে। এলক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য সুনির্দিষ্ট অভিযোজন চাহিদাসমূহ নিরূপণ এবং তা বাস্তবায়নে যথাযথ কৌশল চিহ্নিত করা হয়েছে। এ পরিকল্পনা কেবল একটি জাতীয় প্রতিবেদন নয়, বরং এটা জলবায়ু অভিযোজনের ক্ষেত্রে বিশ্ব দরবারে আমাদের অবস্থান তুলে ধরবে।

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্রণীতব্য জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার চূড়ান্ত খসড়ার ওপর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চূড়ান্ত যাচাইকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা  বলেন।

তিনি বলেন,  জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের মাঝে অভিযোজনমূলক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর আরও জোর দিতে হবে। বাংলাদেশে জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় চিহ্নিত অভিযোজনমূলক কার্যক্রমসমূহ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা হবে।  

সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১.১ মিলিয়ন বা ১১ লাখ হেক্টর ফসলি জমি ঝড়-বৃষ্টি/বন্যার প্লাবন, জলোচ্ছ্বাস, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা থেকে সুরক্ষা পাবে। বার্ষিক ১০.৩ মিলিয়ন টন চাল অতিরিক্ত উৎপাদন হবে। গবাদি পশু ও মৎস্যসম্পদ থেকে মাথাপিছু পুষ্টি গ্রহণ বাড়বে। ঘন ঘন জলবায়ুজনিত বিপর্যয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও তাপপ্রবাহের সমস্যার উন্নতির মাধ্যমে নগর এলাকার প্রায় ৩ কোটি জনগণ উপকৃত হবে। পরিবহন খরচ ১০শতাংশ হ্রাস পাবে। মশা ও জলবাহিত রোগ প্রতিরোধে চিকিৎসা ব্যয় ১৫ শতাংশ হ্রাস পাবে । শহরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আয় ৩০ শতাংশ বাড়বে। প্রায় দেড় কোটি জলবায়ু উদ্বাস্তুর বিপন্নতা হ্রাস পাবে। বৃক্ষের আচ্ছাদন কমপক্ষে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি হবে যাতে বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হবে এবং মানুষের স্বাস্থ্য উন্নত হবে। সুনীল অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে এবং সার্বিকভাবে কার্বন নিঃসরণ কমবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার,  অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান,  পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ন্যাপ প্রণয়ন প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো. মিজানুল হক চৌধুরী এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। ন্যাপ এর ওপর মুক্ত আলোচনা পরিচালনা করেন ন্যাপ প্রণয়ন প্রকল্প কনসর্টিয়াম এর টিম লিডার প্রফেসর ডক্টর আইনুন নিশাত। ন্যাপ উপস্থাপন করেন সিইজিআইএস এর নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান।