জলাভূমি রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: শাহাব উদ্দিন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান জনবান্ধব সরকার জলাভূমি ও এর জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং অবৈধভাবে দখলকৃত জলাশয় উদ্ধারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে কাজ করছে। আর যাতে কোনও জলাভূমি ধ্বংস না হয়, কিংবা কেউ দখল না করতে পারে, সেজন্য সরকারের পাশাপাশি সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সময়ের অঙ্গীকার, জলাভূমি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্যে ‘বিশ্ব জলাভূমি দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ, বিভিন্ন প্রাণী এবং উদ্ভিদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী জলাভূমি রক্ষায় আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

প্রধান বন সংরক্ষক মো.আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন— পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ প্রমুখ। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন— প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু এবং আইইউসিএন এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমীন। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্ট্যাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. এম. মোখলেছুর রহমান এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ।

পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকার জলাভূমি সংরক্ষণের গুরুত্ব সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আরোপের জন্য বিষয়টি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি এলক্ষ্যে বিভিন্ন আইন, বিধিমালা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে জলাভূমি সংরক্ষণের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘হাওড় অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ২০১২ থেকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। হাওর ও জলভূমির উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জলাভূমিসহ জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় দেশের ১৩টি এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।  জলাভূমিসমৃদ্ধ বিভিন্ন এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।’

শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিগুলো সংরক্ষণের জন্য ১৯৯২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত রামসার কনভেশন কার্যকরী করা হয়েছে। বাংলাদেশে ২টি রামসার সাইট আছে, একটি সুন্দরবন, অপরটি টাঙ্গুয়ার হাওর। এছাড়া পাখিসহ জীববৈচিত্র্যের সমাহার হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের তৃতীয় রামসার সাইট ঘোষণার অপেক্ষায় আছে। জলাভূমির সমাহার রামসার সাইট ও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট সুন্দরবন রক্ষায় সরকারের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। সবাই মিলে কাজ করলে আমাদের পরমবন্ধু পুকুর, খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর-বাওড়সহ সব প্রকার জলাশয় রক্ষা পাবে, আমরাও ভালো থাকবো।’