সংকট কাটাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্প নেই: আতিউর রহমান

প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানিতেই সমাধান মিলবে— এমন ধারণা ভুল। জ্বালানি সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বাস্তব  নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকেই আমাদের যেতে হবে। ম্যাক্রো অর্থনীতির বাস্তবতায় এই কৌশলকে ঢেলে সাজানোর কোনও বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত ‘বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু খাত: বরাদ্দ বিশ্লেষণ ও আগামীর পথ নকশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী মহলের অতিলোভে জ্বালানি ব্যবস্থায় অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। তাই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থায় সরকার ও সমাজের আগ্রহ বাড়ছে।’

কৃষি খাতে গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সাবেক গভর্নর বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে কৃষি উৎপাদন  চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তা থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে অনেকগুলো জলবায়ু-সহিষ্ণু ধান, গম, ডাল ও সবজির বীজ আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু  প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে আরও গভীরতর গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের যোগান দেওয়ার প্রয়োজন আছে।’

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সভায় বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিল্পায়ন ও উন্নয়নের চাপ থেকে কৃষিজমি রক্ষা করাটাও পরিবেশ সংরক্ষণের মধ্যেই পড়ে।  আগে যেসব এলাকা থেকে মাটি বা বালু তোলা নিষিদ্ধ ছিল, তার মধ্যে ফসলি জমি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। নতুন আইনের খসড়ায় ফসলি জমিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে ফসলি জমি থেকেও মাটি ও বালি উত্তোলন করা যাবে না। নদী পথের নাব্য বিনষ্ট হতে পারে— এ রকম হুমকি থাকলে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। বালু পরিবহনের কারণে কোনও রাস্তা বা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার জন্য জরিমানা দিতে হবে ইজারাদারকে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের দেশের পরামর্শ নিয়ে আমরা উন্নয়ন কাজ করি। বিদেশি পরামর্শে চিংড়িচাষের নামে চট্টগ্রামের চকোরিয়ার বন ধ্বংস করেছি। চিংড়ি তো উৎপাদন হয়নি, বরং এখন সেখানে বালুর মরুভূমি।’

বাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন,  ‘শিক্ষা, কৃষি, পরিবেশ খাতে আগের বাজেটের চেয়ে বরাদ্দ কমেছে। লুটপাট যেখানে হয় সেখানে বরাদ্দ বাড়ছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী কমিটির সদস্য জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন  সহ-সভাপতি  অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক এম. ফিরোজ আহমেদ, ড. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।