বছর শুরু হলো বায়ু ও শব্দের সর্বোচ্চ দূষণ নিয়ে

২০২৪ সালের প্রথম প্রহরে (রাত ১১টা থেকে রাত ১২টার তুলনায় পরবর্তী ১ ঘণ্টায়) বায়ু দূষণের পরিমাণ প্রায় ৬৪ মাইক্রোগ্রাম (৩৫ ভাগ) বৃদ্ধি পায়। সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ (বস্তুকণা) রেকর্ড হয় ২৪৯ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার যা বায়ুমান সূচকে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচিত।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণা দল গত ৭ বছর যাবত ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বায়ু ও শব্দ দূষণের তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় নববর্ষ উদযাপনের কয়েক ঘণ্টা আগে ও পরে বায়ু এবং শব্দ দূষণের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এই পরিমাপের মাধ্যমে আজ সোমবার এই তথ্য পাওয়া যায়।

নিষেধাজ্ঞার পরও নববর্ষে ঘণ্টাখাানেক ধরে আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুস ওড়ানো হয় রাজধানীজুড়ে

ক্যাপস জানায়, আতশবাজি, পটকা বা এ জাতীয় শব্দ সৃষ্টিকারী বস্তু সাধারণত পটাসিয়াম পারক্লোরেট, বিষাক্ত বেরিয়াম নাইট্রেট, পার্লাইট পাউডার, ম্যাগনেসিয়াম, আলুমিনিয়াম খাদ ও মাটি-পাথর ইত্যদি দিয়ে তৈরি হয়। এগুলো পোড়ানোর ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বায়ু দূষণকারী পদার্থ নির্গত করে, যার মধ্যে রয়েছে বস্তুকণা ২.৫, ও বস্তুকণা ১০, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, এবং কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদি। এই দূষকগুলো হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং ফুসফুসের ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।

ক্যাপসের গবেষণা দলের মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখতে পায়, রাত ১১টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু করে ভোর ৫টা পর্যন্ত আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি শব্দ দূষণ হয়েছে রাত ১২ থেকে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। ২০২৪ সালের প্রথম ঘণ্টায় শব্দ দূষণহার গত দিনের (৩০ডিসেম্বর) তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বেশিরভাগ সময় শব্দের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবলের মধ্যে ছিল। ৭০ ডেসিবলের অধিক শব্দ মানুষ সহ পশু-পাখির কানের বধিরতা সৃষ্টি করতে সক্ষম। এমনকি এই শব্দ গর্ভপাত, শিশুমৃত্যু ও বয়স্কদের হার্টের ঝুঁকিও বাড়ায়।

নববর্ষ উদযাপনের এই প্রচণ্ড শব্দে পাখিরা ওড়াউড়ি করে এবং গাছে বা বিল্ডিংয়ের দেয়ালে আঘাত পেয়ে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে, এমনকি মারাও গিয়েছে।