সাক্ষাৎকারে বিপিসি চেয়ারম্যান

‘কক্সবাজারে পাঁচ তারকা মানের হোটেল করা হবে’

কক্সবাজারে একটি পাঁচ তারকা মানের হোটেল করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বিপিসি)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আলি কদর বলেন, ‘৫ তারকা হোটেলে যে ধরনের বিদেশি গেস্ট আসেন, আমাদের তারকা মানের অবকাঠামো না থাকায় সে ধরনের পর্যটক পাই না। এ কারণে কক্সবাজারে পাঁচ তারকা মানের হোটেলে নির্মাণ করা হবে।’ বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত আলাপে তিনি এ তথ্য জানান।

মো. আলি কদর বলেন, বিদেশি অনেক পর্যটন কাজের কারণে বাংলাদেশে আসেন, তারা আমাদের অবকাঠামোতে আসেন।

পর্যটন করপোরেশনের হোটেল-মোটেলগুলোর সংস্কার চলছে বলেও জানান সংস্থার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমরা সরকারের সহযোগিতায় কিছু ইউনিট নিজেরাই সংস্কার করেছি। কক্সবাজার ও সিলেটে যে ইউনিটগুলো আছে, পিপিপি’র (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মাধ্যমে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম; সেগুলো পিপিপি’র তালিকাভুক্ত আছে। তবে সব ইউনিটে যথেষ্ট সাড়া পাইনি। সেকারণে যেগুলো পিপিপি-তে বাস্তবায়ন করতে পারবো না, সেগুলোর বিকল্প অর্থসংস্থানের জন্য চিন্তা করছি। বিদেশি কোনও অর্থায়ন পাওয়া যায় কিনা, সে চেষ্টা চলছে।

বর্তমানে পর্যটন করপোরেশন লাভজনক অবস্থানে আছে বলে জানান মো. আলি কদর। তিনি বলেন, বিগত অর্থ বছরে আমাদের মুনাফা ছিল না করোনার কারণে। করোনার সময় বাংলাদেশের পর্যটন খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে, যাতে নব উদ্যমে বিকশিত করতে পারি। তবে শেষ ৬ মাসে আমাদের আয় বেড়েছে। এ বছর আমরা আশা করছি এ বছর আয় আরও বাড়বে। ব্যাপক ভাবে সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি নভেম্বর থেকে আরও অনেক বেশি সাড়া পাবো।

নিজের কর্মস্থলে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো.আলি কদরপর্যটনকে আরও গতিশীল ও বিকশিত করতে পর্যটন করপোরেশনের বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে কিছু প্রকল্প শেষ হয়েছে, কিছু আগামী বছর শেষ হবে, আর কিছু প্রকল্প শেষ হতে দুই-তিন বছর লাগবে। এই  প্রকল্প শেষ হলে পর্যটন খাতে আরও ভুমিকা রাখা সম্ভব হবে। আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে, সেটিও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার জন এখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বড় বড় হোটেলগুলোতে কাজ করছেন তারা।’

নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে মো. আলি কদর বলেন, পুরো বাংলাদেশই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা। চট্টগ্রামের পারকিতে আমরা আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র করার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ৫০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।   আশা করছি, এটি উন্মুক্ত হলে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাভাবিকভাবেই পারকিতে অন্যান্য বেসরকারি উদ্যোক্তারাও এখন নানা উদ্যোগ হাতে নেবেন। কক্সবাজারের মহেশখালীতেও আমরা আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র করার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সেখানে সমীক্ষা ও ডিজাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এগুলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা হবে।

পর্যটন খাতে প্রশিক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মো. আলি কদর। তিনি বলেন, পর্যটন পুরোপুরি সেবা নির্ভর। এই সেক্টরে যারা কাজ করেন তাদের সেবার ওপর নির্ভর করে দেশে পর্যটনের অগ্রগতি। আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যে সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বিশ্বমানের। এই সেক্টরে জনবলের চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে আমরাও আরও বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষমতা বাড়াচ্ছি।

ছবি: চৌধুরী আকবর হোসেন