যুক্তরাজ্যে তারুণ্যের প্রেরণা সিলেটের বক্সিং কন্যা রোকশানা

রোকশানা বেগমযুক্তরাজ্যে শুধু স্বদেশি বা এশিয়ান নয়, গোটা ব্রিটিশ তরুণ প্রজন্মের কাছেই প্রেরণার এক নাম হিসেবে পরিচিত এখন সিলেটের রোকশানা। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী কিক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন। অথচ এক সময় এই রোকশানাকে লড়তে হয়েছে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের পিঁড়িতে না বসার জন্য। কঠোর ধর্মীয় অনুশাসন আর শারীরিকভাবে দুর্বলতার অতীত নিয়ে বেড়ে ওঠা রোকশানা এখন কিক বক্সিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।

লন্ডনে বেড়ে ওঠা এক সাধারণ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পরিবারের কন্যা রোকশানা বেগমের জীবন যুদ্ধের গল্প সিনেমার মতোই। মাত্র পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এ রোকশানা ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা পেছনে ফেলে সাফল্যের লক্ষ্যে লড়ে গেছেন একাগ্র চিত্তে।

রোকশানা বেগম শনিবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে রোকশানা বলেন, ‘আমার পরিবার অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ। তা সত্ত্বেও আমি কিক বক্সিংকে ছোটবেলা থেকে ভালোবাসতাম। যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন মাকে বলতে হতো, মা আমি কি মাত্র এক ঘণ্টার জন্য জিমে যেতে পারি? সেই আমিই আজকের আমি।’ ৩৪ বছর বয়সী রোকসানা বিশ্বাস করেন, লক্ষ্য অর্জনে একাগ্রতা থাকলে কোনও বাধাই আটকাতে পারে না।

এই নারী বক্সারের জন্ম লন্ডনের ইলফোর্ড এলাকায়। লন্ডনে জন্ম নিলেও রোকশানার দাদার বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটের বালাগঞ্জে। বাবা আওলাদ আলী এবং মা মিনারা বেগম দম্পতির তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে রোকশানা দ্বিতীয়। ২০০৬ সালে ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনস্টার থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। ১৬ বছর বয়সে রোকশানা সর্বশেষ বাংলাদেশে গেছেন।বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রোকশানা পর পর পাঁচ বছর নিজের দখলে রেখেছেন ব্রিটিশ কিক বক্সিং ও মুয়ে থাই চ্যাম্পিয়নের সম্মান।

তিনি জানান,শরীরচর্চা করতে গিয়ে শখের বশে শুরু করেন বক্সিং প্রশিক্ষণ। লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এলাকার সেই ব্যায়ামাগারে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খ্যাতনামা প্রশিক্ষক বিল জাডের কাছে থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী মুয়ে থাই শেখার সুযোগ পান তিনি। রোকশানা জানান, তিনি সব সময়ই তরুণদের নিয়ে কাজ করছেন। সুবিধাবঞ্চিত তরুণদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে আনন্দ পান তিনি।