যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অর্ধশতাধিক ব্রিটিশ এমপি উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার (২৭ মার্চ ২০১৮) যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের দি টেরেস প্যাভিলিয়নে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরও একইভাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র। বাঙালির মানবিকতা আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।’ রোহিঙ্গাদের মানবিক দুর্যোগে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর প্রশংসা করে মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে। কক্সবাজারের মতো একটি জনবহুল এলাকার মানুষ নিজেদের কষ্ট অগ্রাহ্য করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ একটি মানবিক ও উদার রাষ্ট্র। এই ভূখণ্ডের মানুষ মানবিক চেতনায় সমৃদ্ধ। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে রাষ্ট্রের জন্ম, তা আজ বিশ্বসভায় সমাদৃত এবং ৪৭ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে।’
সঙ্গীতা আহমেদ ও সৈয়দা সায়মা আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের হোস্ট জিম ফিজপেট্রিক এমপি। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যত সংখ্যক এমপি হাজির হয়েছেন, অন্য কোনও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমনটি আর ঘটেনি।
এই আয়োজনে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার বক্তৃতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তর সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডনে আসার কথা উল্লেখ করেন। সেই সময়ের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের ভূমিকাও স্মরণ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের সরকারি দল কনজারভেটিভ পার্টি, বিরোধী দল লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস ও স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এমপিসহ অর্ধশতাধিক ব্রিটিশ এমপি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে ৬৩ জন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদের উপস্থিতি স্বাক্ষর বইয়ে রেকর্ডভুক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশিত হয়। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ এমপিদের হাতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’র ইংরেজি সংস্করণসহ বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন পরিসংখ্যান সম্বলিত তথ্য তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ মিডিয়া, লেকচার ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মাইকেল এলিস, শ্যাডো সেক্রেটারি অফ স্টেট ডেভি আব্রাহাম, শ্যাডো লিডার অব দ্য হাউস অফ কমন্স ভ্যালেরি ভাজ, শ্যাডো সেক্রেটারি অব স্টেট জনথন আশওয়ার্থ, শ্যাডো এসএনপি স্পোকসপার্সন জোয়ান্না চেরি, শ্যাডো মিনিস্টার জুলিয়ে কুপার, শ্যাডো মিনিস্টার ফ্যাবিয়ান হ্যামিল্টন, শ্যাডো চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার জন ম্যাকডনাল, বিরেন্দ্র শর্মা, জেফ স্মিথ, নাজ শাহ, জেস ফিলিপস, জেসিকা মডার্ন, স্যান্ডি মার্টিন, জনাথন পরইনলডস, উইল কুইন্স, থেরেসা ভেলি, স্টিফেন টিমস, সারাহ জোনস, লর্ড রাসেল ময়লি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জালাল উদ্দিন, সৈয়দ মোজাম্মেল আলী, মারুফ আহমদ চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাজ্জাদ মিয়া, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, শাহ শামীম আহমদ, মাসুক ইবনে আনিস, রবিন পাল, সারব আলী, আসম মিসবাহ, মেহের নিগার চৌধুরী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।