বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ

দূরের গ্রাম থেকেও মুসুল্লিরা আসেন বায়তুল আজগর মসজিদে

বিশ্বে গর্ব করার মতো বাংলাদেশের আছে হাজার বছরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের অন্যতম অনুষঙ্গ স্থাপত্যকলা। শিল্পের এই মাধ্যমে কোনও অংশে কম ছিল না এ অঞ্চল। বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত ভ্রমণচারী ও মননশীল মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ। তৃতীয় পর্বে থাকছে কুমিল্লার বায়তুল আজগর সাত গম্বুজ জামে মসজিদ নিয়ে প্রতিবেদন।

স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন বায়তুল আজগর সাত গম্বুজ জামে মসজিদস্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন বায়তুল আজগর সাত গম্বুজ জামে মসজিদ। মুঘল, তুর্কি ও পারস্য ঘরানার কারুকাজে নির্মিত মসজিদটি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায়। সশরীরে দেখতে, যেতে হবে উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার পশ্চিমের গুণাইঘর গ্রামে।

চোখজুড়ানো এই মসজিদে ক্যালিগ্রাফি, কারুকাজ ও নকশার সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবেই। এটি নির্মাণে ইট, বালু ও সিমেন্টের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে চীনামাটি ও টাইলস। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভিড় জমায় গুণাইঘরে। দূরবর্তী গ্রাম থেকে অনেকেই এ মসজিদে আসেন জুমার নামাজ পড়বেন বলে।

সাতটি গম্বুজ, চারটি সুউচ্চ মিনার রয়েছেজানা যায়, ২০০২ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০০৫ সালে উদ্বোধন হয়। সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির স্থপতি শাহিন মালিক। ক্যালিগ্রাফি, কারুকাজ ও নকশার কারুকাজ করেছেন বশির মেসবাহ।

মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সূত্র জানায়, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট, প্রস্থ ৩৬ ফুট। সাতটি গম্বুজ, চারটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৮০ ফুট। ভেতরে রয়েছে সুদৃশ্য ঝাড়বাতি।

.মসজিদের আলোকসজ্জা অনেক দূর থেকেও নজর কাড়ে। এর আঙিনায় রয়েছে একটি চমৎকার ফুলের বাগান। ভেতরে-বাইরে অগণিত চাঁদ ও তারা আঁকা। বাংলায় আটটি ক্যালিগ্রাফি রয়েছে। আরবিতে লেখা আছে কোরআনের বাণী।

মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মোট ৩৫০ মণ চীনামাটির টুকরো ও ২৫০টি গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, শেষ বিকালের আলো নান্দনিক মসজিদটির পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে ছড়িয়ে পড়ে। সূর্যের আলো পড়ে শুভ্র মসজিদটি ঝলমল করে ওঠে।

ভেতরে-বাইরে অগণিত চাঁদ ও তারা আঁকাপাশের উপজেলা মুরাদনগর থেকে আবুল কালাম এসেছেন পরিবার নিয়ে। তারা ঘুরে ঘুরে মসজিদটি দেখছিলেন। আবুল কালাম বললেন, গ্রামে এত সুন্দর মসজিদ নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। যতোই দেখি, তবু মনে হয় ঠিকমতো দেখা হয়নি।

.মসজিদের খতিব মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী বলেন, ‘বায়তুল আজগর সাত গম্বুজ মসজিদটি নির্মাণশৈলীর দিক থেকে দেশের অন্যতম। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে।’

 

/এফএ/