বিশ্বে গর্ব করার মতো বাংলাদেশের আছে হাজার বছরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের অন্যতম অনুষঙ্গ স্থাপত্যকলা। শিল্পের এই মাধ্যমে কোনও অংশে কম ছিল না এ অঞ্চল। বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত ভ্রমণচারী ও মননশীল মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী কুসুম্বা মসজিদ।
নওগাঁ জেলার অন্যতম গৌরব ঐতিহ্যবাহী কুসুম্বা মসজিদ। মান্দা উপজেলা সদর প্রসাদপুর বাজার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের রাস্তার পাশে এর অবস্থান।
প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকরা আসে মসজিদটি দেখতে। সুলতানি আমলের পরবর্তীকালের স্থাপনার এক দারুণ নিদর্শন এটি।
মুর্শিদাবাদ জেলার ডিএম শামসুর রহমানের লেখা ইতিহাস ‘মাহিনো’র মাধ্যমে জানা যায়, ৯০৭ (১৫০১ খ্রিস্টাব্দ) হিজরিতে কুসুম্বা দীঘি খনন কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ৯০৯ হিজরিতে। এই দীঘির পশ্চিম পাড়ে ফেলা মাটির ওপর ৯১০ (১৫০৪ খ্রি) হিজরিতে মসজিদ নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন আলাউদ্দিন হোসেন শাহ। মসজিদের নির্মাণকাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ হয় ৯৬৬ হিজরিতে।
দীঘির খনন ও মসজিদ নির্মাণের সময় মসজিদের চত্বরে বিশাল ফুল বাগান ছিল। সেই কুসুমবাগ থেকে কালক্রমে কুসুম্বা নাম রাখা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে ঐতিহাসিক এ মসজিদের ছবি রয়েছে।
বগুড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর কুসুম্বা মসজিদটি অধিগ্রহণ করেছে। মসজিদটির গম্বুজের খিলানে গোড়ার দিকে ইট খুলে যেতে বসেছে। একটি শেড নির্মাণ করা হলেও এখানে দর্শনার্থীদের জন্য নেই কোনও বিশ্রামাগার। পর্যটক ও গবেষকরা এ মসজিদের টিকে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা পর্যটকদের জন্য একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছি। মসজিদটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে পুকুরপড়ে হাঁটার রাস্তা ও বেঞ্চ বসানোর প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।