স্থাপত্যে সুনিপুণ জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ

বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ।

বাইরে থেকে দেখলেই জুড়িয়ে যায় চোখ। ভেতরে অগণিত খিলান। দৃষ্টিনন্দন খিলানগুলো একেবারে জ্যামিতিক সূত্র মেনে তৈরি। পুরো অবয়বজুড়ে আছে ইসলামিক নকশার ছাপ।

বলছিলাম দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক মসজিদ জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদের কথা। চট্টগ্রাম নগরীর ওয়াসার মোড় হয়ে আগ্রাবাদ যেতেই হাতের বামে পড়বে চোখ ধাঁধানো মসজিদটি। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী কমপ্লেক্স। এখানে আছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশাল লাইব্রেরি। পাঁচতলা মসজিদ প্লাজা ও কমপ্লেক্স। ৩০ হাজার মুসুল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন এখানে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭৬ সালে সেনা ভূসম্পত্তির ১২ একর জায়গা কর্তৃপক্ষ মসজিদের অনুকূলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিলে সেখানে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এরপর সর্বশেষ ২০০৪ সালের ১৯ এপ্রিল কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিল-২০১৩’ পাসের মাধ্যমে এ মসজিদ ও কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপনা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় আনা হয়। এরপর থেকে মসজিদটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানেই চলছে।

সুপরিসর সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় মসজিদে।। নিচতলায় অজুখানা। তার পাশেই নামাজ পড়ার বিশাল জায়গা। শুভ্র পিলারগুলোর পাশে নান্দনিক আকারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে জুতোদানি। আলো-বাতাসের চলাচলে এক ধরনের শীতলতা বিরাজ করে ভেতরে।

শুক্রবার ছাড়া অন্য সময় নিচতলায় মুসুল্লিদের দেখা যায় না। দ্বিতীয় তলায় ইমামের মিম্বর। সেখানেই চলে যান মুসুল্লিরা। তৃতীয় ও চতুর্থ তলাও শুক্রবার ছাড়া বলতে গেলে খালি থাকে। একেক তলায় ৫ থেকে ৬ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে নামাজ পড়তে আসেন মুসল্লিরা। ওই দিন কানায় কানায় ভরা থাকে মসজিদটি।

মূল ভবনের সামনে বিশাল মাঠ। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় ওই মাঠে। তখন কমপক্ষে ৫০ হাজার মুসুল্লির সমাগম হয় এখানে।