বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে ঢাকার বিখ্যাত কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ।
মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল বারি। ২০০৭ সালে মসজিদটির শতবর্ষ পেরিয়েছে। এশিয়াটিক সোসাইটির ‘ঢাকা কোষ’ গ্রন্থের তথ্যানুযায়ী ১৯০৭ সালে এটি নির্মাণ করেন আবদুল বারি। মূল অংশ ও বারান্দাসহ প্রায় দুই কাঠা জায়গায় অবস্থিত মসজিদটি।
মূল অবকাঠামোয় আলাদা সমতল ছাদ নেই। ছাদের বেশিরভাগ অংশে সরাসরি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন আকৃতির কয়েকটি গম্বুজ। মসজিদ ভবনের মধ্যে বড়, দুই পাশে মাঝারি ধরনের ও চারকোনায় একই ধরনের চারটি গম্বুজ রয়েছে। এ ছাড়াও ছয়টি ছোট ও দুটো জোড়া পিলারের দুটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোর উচ্চতা ৬-১২ ফুট। ছাদবিহীন এ মসজিদের প্রতিটি পিলারের মাথায় রয়েছে গম্বুজ অথবা মিনার।
মূল ভবনের ভেতর ও বাইরে সিরামিক দিয়ে তৈরি ফুল, ফুলের গাছ ও আঙুর ফলের ছবির মাধ্যমে মসজিদের অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
কয়েক বছর আগে মসজিদের মূল অবকাঠামো থেকে উত্তর ও পূর্ব পাশে সম্প্রসারণ করা হয়। চীনামাটির ব্যবহার ও মসজিদের সৌন্দর্যে চাকচিক্যময় করার কারণে অনেকে এটাকে ‘চিনির টুকরার মসজিদ’ নামেও ডাকে। এ মসজিদের পূর্ব-দক্ষিণে রয়েছে অজু করার একটি হাউস। হাউসে সিমেন্টের একটি পদ্মফুলও আছে।
আশির দশকের শেষের দিক থেকে এ পর্যন্ত মসজিদের বিভিন্ন অংশে কয়েক দফায় সংস্কার করা হলেও মূল শৈল্পিকতা, কারুকাজ ও নকশায় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। সংস্কারের সময় মসজিদটি প্রশস্ত হয়। মূল স্থাপনার পাশেই তৈরি হয় বহুতল নতুন ভবন।
নানান রঙের চীনামাটির টুকরোর পাশাপাশি ব্যাপকহারে চীনা মোজাইক ব্যবহার করা হয়েছে গম্বুজগুলোতে।