বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে ঢাকার সবচেয়ে পুরনো বিনত বিবির মসজিদ।
'মসজিদের নগরী' খ্যাত ঢাকা। ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের প্রাণের শহর। সর্বপ্রথম এই শহরে কে আজান দিয়েছিল ইতিহাসে তার নাম না থাকলে কোন মসজিদে দেওয়া হয়েছিল তা মোটামুটি সর্বজনবিদিত। পুরান ঢাকার ৬ নম্বর নারিন্দা রোডের হায়াৎ বেপারির পুলের উত্তর দিকে অবস্থিত রাজধানীর প্রথম মসজিদ ‘বিনত বিবির মসজিদ’।
প্রায় সাত কাঠা জায়গায় নির্মিত চারকোণা মসজিদটির আদি গঠনশৈলীতে একটি কেন্দ্রীয় গম্বুজ থাকলেও ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয়বার সংস্কারকালে আরও একটি গম্বুজ যুক্ত করা হয়।
‘কোম্পানি আমলে ঢাকা’ গ্রন্থে জেমস টেলর উল্লেখ করেছেন, ‘১৮৩২ সালে ঢাকার তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট জর্জ হেনরি ওয়াল্টার এক রিপোর্টে বর্ণনা করেন, তৎকালীন ঢাকায় মসজিদ ছিল মাত্র ১৫৩টি। এই সংখ্যা পরে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ক্রমেই ঢাকা পরিণত হতে থাকে মসজিদের শহরে।’ এখন ঢাকায় কতোটি মসজিদ আছে তা বলা কঠিন। তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (২০১৬) তথ্য অনুসারে, ঢাকায় ১১ হাজারেরও বেশি মসজিদ রয়েছে। প্রায় সবকটাতেই আছে নান্দনিকতা ও আধুনিকতার ছোঁয়া।
আরেকটি ধারণা মতে, সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের আমলে বানানো হলেও তিনি বা মেয়ে সরাসরি এর তত্ত্বাবধান করেননি। ওই সময় আরকান আলী নামের এক পারস্য সওদাগর ঢাকার নারিন্দায় বসবাস শুরু করেন এবং তিনিই বিনত বিবির মসজিদ নির্মাণ করেন।
কালের বিবর্তনে মসজিদটি তার সৌন্দর্য হারালেও ঢাকার প্রথম মসজিদ হিসেবে এর ঐতিহ্য মোটেও কমেনি। এখনও দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন মসজিদটি একনজর দেখতে।
বিনত বিবির মসজিদের ১০ গজ দূরেই বিনত বিবি ও তার বাবার মাজার। কালের বিবর্তনে অনেক কিছু পাল্টে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পুরনো মসজিদকে পাশে রেখে তৈরি করা হয়েছে ৭ তলা আরেকটি মসজিদ। উল্লেখ্য বিনত বিবির মসজিদটিতে এখন নামাজ পড়া না হলেও শিশুদের পবিত্র কোরআন শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়।