বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ

৩৫০ বছর আগের হায়াত বেপারী মসজিদ

বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে ঢাকার হায়াত বেপারী মসজিদ।

১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে হায়াত বেপারী নামের এক ধনী ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেন। তার নামেই মসজিদের নামকরণ। রাজধানীর নারিন্দার ধোলাইখাল সড়কের নতুন রাস্তার মোড়ের ৭২ হৃষিকেশ দাশ রোডে গেলে দেখা যাবে ঐতিহাসিক মসজিদটি। নারিন্দা পঞ্চায়েত মসজিদ নামেও পরিচিত এটি।

আগে মসজিদ ঘেঁষা একটি সেতু ছিল। সেতুর নাম ছিল ‘নারিন্দা পুল’। বুড়িগঙ্গার শাখা ছিল ধোলাইখাল। আজ সেই খাল কিংবা পুল নেই। ধোলাইখাল নামে জায়গাটা অবশ্য রয়ে গেছে। রয়ে গেছে মসজিদটিও।

হায়াত ব্যাপারী মসজিদের অবস্থান ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ খ্যাত ‘বিনত বিবির মসজিদ’–এর কাছেই। মোগল সম্রাটের আমলে নির্মিত বিনত বিবির মসজিদটি নারিন্দা চৌরাস্তার মোড়ে। হায়াত ব্যাপারীর মসজিদ তার ঠিক বিপরীতে। দুটি মসজিদই ঢাকার ঐতিহ্য বহন করে আছে।

বিনত বিবির মসজিদের শিলালিপি পাওয়া গেলেও হায়াত ব্যাপারী মসজিদ নিয়ে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। হায়াত ব্যাপারী কে ছিলেন, সে সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। কেউ বলছেন, হায়াত ব্যাপারী ছিলেন মোগল সম্রাটের একজন স্থপতি। তিনি নারিন্দায় পুল নির্মাণ করে সম্রাটের কাছ থেকে অনেক উপহার লাভ করেন। তা দিয়ে তিনি নারিন্দায় অনেক সম্পত্তি কেনেন। আবার কারও মতে, হায়াত ব্যাপারী ছিলেন দক্ষ রাজমিস্ত্রি। দক্ষ হাতে সেতু ও মসজিদটি তৈরি করেন।

৩৬০ বছর বয়সী ঐতিহাসিক এই মসজিদটির পুরনো কিছু নিদর্শন কয়েক বছর আগেও দৃশ্যমান ছিল। পরিসরও ছিল বিশাল। কিন্তু নানা সময়ে দখলের কবলে পড়ে ক্রমে এটি ছোট হয়ে এসেছে। মসজিদের জমি দখলের বিষয়ে নারিন্দার স্থায়ী প্রবীণ বাসিন্দা মো. হায়দার আলী বলেন, মসজিদটির জন্য হায়াত ব্যাপারী এক শ’ বিঘা জমি রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ মসজিদটির নামে দুই কাঠা জমিও নেই। স্থানীয় এক প্রভাবশালী সব দখল করে নিয়েছেন। থানায় অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি। মসজিদের পাশের দোকান থেকে শুরু করে ট্রাক স্ট্যান্ড পুরোটাই ছিল মসজিদের জায়গা। এখন এর কিছুই নেই।