দেশের ভেতরেই আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান খালেদার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের মানুষের ওপর নির্ভর করুন। দেশের ভেতরে যে সংকট সৃষ্টি করেছেন, তা দেশের ভেতরেই আলাপ-আলোচনার পথে নিরসন করুন। সময় দ্রুত বয়ে যাচ্ছে। আর সময় ক্ষেপনের চেষ্টা করবেন না। তার দাবি, বর্তমান ক্ষমতাসীনদের কোনও গণভিত্তি নেই। জনগণের মধ্যে তাদের কোনও সমর্থন নেই। তাই তারা অন্যের শক্তির ওপর ভর করে দেশের মানুষকে পদানত করে রাখতে চায়। এভাবে বেশিদিন চলা যায় না। তিনি মনে করেন, বর্তমান শাসকেরাও এইভাবে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

শনিবার বিকালে জাগপা’র ৩৬তম জাতীয় কনভেনশনে প্রধান অতিথির ভাষণে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। এদিন রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের প্রধান শফিউল আলম প্রধান।

খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, দেশ ও জাতির এক গভীর সংকটকাল চলছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার নেই। বৈধ সংসদ নেই। তথাকথিত সংসদে কোনও কার্যকর বিরোধী দল নেই। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  বায়োমেট্রিক পদ্ধতিবায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময় বাড়লো

খালেদা জিয়া মনে করেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো স্বাভাবিকভাবে আইন অনুযায়ী তাদের কর্তব্য পালন করতে পারছে না। তাদেরকে রাখা হয়েছে শুধু গণবিচ্ছিন্ন ও অবৈধ সরকারকে জনগণের ক্ষোভ থেকে রক্ষা করার জন্য। তারা সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তার দাবি, দেশে কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থা নেই। প্রতিদিন গড়ে ১৪ জন মানুষ খুন হচ্ছে। নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না।

বিএনপির চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভের আটশো কোটি টাকা ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে। দফায় দফায় অবিশ্বাস্য রকমের ব্যয় বাড়িয়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করা হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, গুপ্তহত্যা এবং অতর্কিতে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ব্লগার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখক, প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক, দূতাবাস কর্মী এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ ধরনের হামলা ও হত্যার শিকার হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে সরকার উৎখাতে ব্যর্থ বিএনপি-জামায়াত জো

তার ভাষ্য, আতংকের ব্যাপার হচ্ছে, বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর নামে এইসব হত্যার দায় স্বীকার করা হচ্ছে। এইসব ঘটনায় প্রতিটি নাগরিক আজ  নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ও উদ্বিগ্ন। সরকার এসব হামলা ও হত্যার ঘটনা বন্ধ করতে পারছে না। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির কথা তারা অস্বীকার করছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না। বরং তারা এর দায়-দায়িত্ব চাপাচ্ছে বিরোধী দলের ওপর। এতে তদন্ত প্রভাবিত হচ্ছে এবং প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে।

খালেদা জঙ্গিবাদী তৎপরতাকে কঠোর হাতে দমন করেছিলাম।জঙ্গিবাদী নেতাদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা হয়েছিলো। তাদের নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ অকার্যকর করে ফেলা সম্ভব হয়েছিলো। আবার সেই জঙ্গিবাদের উত্থানের আলামত দেখে আমরা দেশবাসীর সঙ্গে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

তিনি মনে করেন, এভাবে দেশ চলতে পারে না। তার আহ্বান, দেশে গণতন্ত্র আনতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এসটিএস/এপিএইচ/