সরকারের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে পড়ার ভয়ে ক্রসফায়ার: খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়াগ্রেফতার হওয়া অপরাধীদের দেওয়া তথ্যে অপরাধের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টতা উঠে আসার কারণেই তাদের ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, চলমান সাঁড়াশি অভিযানে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূরবানী ইন্টান্যাশনালে ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।  
ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। এতে সভাপতিত্বে করেন জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান।
মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রিমান্ডে নেওয়া গোলাম সাইফুল্লাহ ফাহিম শনিবার সকালে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়া এই বক্তব্য রাখলেন। তিনি বলেন, এখন দেশ আছে কি না, সেটাই সন্দেহ। একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনও অপরাধীর বিচার হয়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে হত্যা করা হলো। তখন অনেক হইচই হলো। বললো, ৪ দিনের মধ্যে হত্যকারীদের ধরে বিচার করা হবে। আজ কয়েকবছর হয়ে গেলো কিছুই হয়নি। কেন হয়নি? এর পেছেনে নিশ্চয় বড় কারণ আছে। কারণ, যদি হত্যাকারীদের ধরা হয়, সত্যি বেরিয়ে আসবে। তাদের কাছে (সাগর-রুনি) সরকারের অপকর্ম, চুরি, দুর্নীতির রেকর্ড ছিল। অনেক তথ্য ছিল। এসব যেই কম্পিউটারে ছিল সেটি চুরি করে নিয়ে গেছে। আর কোনও জিনিস চুরি হয়নি। 

জঙ্গি দমনে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের সমালোচনা করে বিএনপি  চেয়ারপারসন বলেন, এই সরকার জনগণের নির্বাচিত নয়। জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে ধরতে পারবে না। কিন্তু তারা সেই নির্দেশনা মানছে না। এরা আদালতের নির্দেশ মানে না।

দেশে বর্তমানে কারও কোনও নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছি, সেটি হারিয়ে গেছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সবার সমান অধিবার, নিরাপত্তা আজ নেই।

সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিজে দেশ চালাচ্ছেন, নাকি কারও নির্দেশ পালন করছেন, সেই প্রশ্নও তোলেন খালেদা জিয়া।

দেশে আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে আছেন, তিনি কি প্রধানমন্ত্রী, না অন্য কোনও মন্ত্রী হিসেবে আছেন? দেশের মানুষ মনে করেন, তিনি নামে প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু  তিনি নির্দেশ পালন করেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না।

দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে চলেছে দাবি করে এই অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।

ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ উদ্দিন, নগর জাগপার সভাপতি আকসাদুর রহমান, জাগপা মজদুরলীগের সভাপতি শেখ জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

এছাড়া নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এমএম বাহাউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।  

২০ দলের মধ্যে ইফতার মাহফিলে অংশ নেয়, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, জাতীয় পার্টির ( কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানী, মহাসচিব গোলাম মোস্তাফা ভূঁইয়া, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব,  ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট  আজারুল ইসলাম , খেলাফত মসলিজের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহামন পেশয়ারী, সাম্যদলের সভাপতি কমরেড সাইদ আহমেদ, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিম, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরী, পিপলস পার্টির মহাসচিব গরীবে নেওয়াজ প্রমুখ।

বিএনপির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল(অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার প্রমুখ।

আরও পড়তে পারেন: রাষ্ট্র আইন হাতে তুলে নিচ্ছে: সুলতানা কামাল

/এনএস/এসটিএস/এমএনএইচ/