স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক

অনেক অভিযোগ, তবু আমলে নিচ্ছে না বিএনপির হাই কমান্ড

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বিএনপির নতুন স্থায়ী কমিটির বৈঠক

নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে দলে ক্ষোভ সঞ্চার, জ্যেষ্ঠতা ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলেও তা আমলে নিচ্ছে না বিএনপির হাই কমান্ড। পরিবর্তন আসছে না দলের নব গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির কোনও পদেও। আর খালি দুটি পদে বঞ্চিতদের অগ্রাধিকারের কথা বলা হলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে।  বৃহস্পতিবার রাতে নতুন স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে দলের নীতিনির্ধারকদের এ মনোভাবের কথা জানা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কমিটিতে আসা নতুনদের মধ্যে দুজন অনুপস্থিত ছিলেন। এরা হচ্ছেন সালাউদ্দিন আহমেদ ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ভারতের শিলংয়ের কারা হাসপাতালে থাকায় আসতে পারেননি সালাহউদ্দিন আহমেদ, আর আমির খসরু বিদেশে রয়েছেন ব্যবসায়িক কারণে।   পুরনোদের মধ্যে আসতে পারেনি এমকে আনোয়ার, ড. আবদুল মঈন খান। আর দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান লন্ডনে থাকায় তিনি এ মুহূর্তে হিসাবের বাইরে রয়েছেন।  

প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বাংলা ট্রিবিউনকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে। সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মূল আলোচনা সাংগঠনিকই ছিল।

স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, প্রত্যেক ওয়ার্ডে কমপক্ষে ১০০ জন নিবন্ধিত সদস্য করতে হবে। জেলা কমিটি হবে ১৫১ সদস্যের। এর মধ্যে ৭৪টি হবে কর্মকর্তা পর্যায়ের পদ, বাকি ৭৬টি হবে সদস্য পদ।

জানা গেছে, নব গঠিত নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে পরিবর্তন আসছে না। কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা প্রচার মাধ্যমে থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোনও হেরফের হচ্ছে না। তবে শূন্য পদগুলোয় যারা বঞ্চিত, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কমিটি বাড়ানো হচ্ছে না। কোনও পরিবর্তন আসছে না। স্থায়ী কমিটির শূন্য দুটি পদে কারা আসছেন, এ নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানান সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি জানান, এটা তো ম্যাডাম দেখবেন। এ নিয়ে কেউ কথা বলেনি।

জানা গেছে, প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে সংগঠন, কর্মসূচি, দলীয় কর্মসূচি নিয়েও সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে রামপাল ইস্যুতে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি ২১ আগস্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জেয়ারত ও ফুল দেওয়ার কথা আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য জানান, জাতীয় ঐক্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপির দু’জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আরও অন্তত দুই-তিনজনকে যুক্ত করে প্রক্রিয়াটি সফল করতে কাজ করবেন। যদিও ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন,‘ঐক্য তো আছেই। ২০ দলীয় জোট।’

বৈঠকে ২০ দলীয় জোটে জামায়াতকে রাখা-না রাখার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জমির উদ্দিন বলেন, ‘না, তাদের না রাখার কী আছে। আমরা (তাদের) বের করে দেব নাকি? এসব নিয়ে কেন আলোচনা হবে?’ –পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়েন ব্যারিস্টার জমির।

ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে নিয়ে দলের অসন্তোষ প্রসঙ্গেও বড় ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি বলে স্থায়ী কমিটির একটি সূত্র জানিয়েছে। নতুন গঠিত কমিটি নিয়ে ক্ষোভসহ নানা অভিযোগ বিষয়ে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত এই কমিটিই থাকছে বলে জানান স্থায়ী কমিটির এক সদস্য।

/এসটিএস/টিএন/

আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক শুরু