বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, শনিবার (১০ মে) সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা যদি আগেই ঘোষণা করতো, তাহলে তো সমস্যা হতো না। তিনি বলেন, আমরা খুশি, বিলম্ব হলেও তারা (সরকার) এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে।
রবিবার (১১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের উদ্যোগে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা গত কয়েক দিনের কিছু ঘটনা দেখলাম। বিএনপির পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এপ্রিল মাসে লিখিতভাবে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলাম যে ফ্যাসিবাদী সরকারের অপরাধ—গুম, খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধ এসবের বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। আমরা বলেছি, ক্ষমতাসীন যে দলটি এবং সেই দলটির সঙ্গে যুক্ত যারাই আছে, সবার বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার দ্রুত। যাতে এই দেশের রাজনীতির ময়দান জঞ্জালমুক্ত হয়। সাক্ষাতে আমরা অনুরোধও করেছি। আমরা বলেছি, এটা না করলে নানা সংকট সৃষ্টি হবে। তারা শুনলেন না। শেষ পর্যন্ত যে পরিস্থিতিতে গতকাল (শনিবার) তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হলো—এটা কি তাদের জন্য খুব সম্মানজনক পরিস্থিতি ছিল?
নজরুল ইসলাম খান বলেন, তারা যদি আমাদের অনুরোধ রাখতেন, আমাদের পরামর্শ শুনতেন, এবং যে সিদ্ধান্ত শনিবার নিয়েছেন, সেটা যদি আগেই ঘোষণা করতেন, তাহলে তো সমস্যাটাই হতো না। আমরা খুশি, বিলম্ব হলেও তারা (সরকার) এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিবাদীদের হাত থেকেও মুক্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হলো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যে এক দফার লড়াই করেছে, খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, মিথ্যা মামলায় নিগৃহীত হয়েছে, অঙ্গহানি হয়েছে—সেটা শুধুই ফ্যাসিবাদের পতন ছিল না। সেটা ছিল ফ্যাসিবাদের পতন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। একটি অংশ পালিত হয়েছে, আর বাকিটার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। এর জন্যই আমরা মনে করি, কিছু সংস্কারের প্রয়োজন। আমরা সেসব প্রস্তাব দিয়েছি। তাই সেসব সংস্কার করে নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা অনুরোধ করবো যে বিব্রতকর বা অনভিপ্রেত পরিস্থিতি আমরা দেখলাম— সেটা শুধুই বিলম্বের কারণে, সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি আর যেন না হয়।
আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তিনি দেশের কল্যাণে কাজ করেছেন, কিন্তু তাই বলে তিনি তার এলাকার উন্নয়নের কথা ভুলে যাননি। চট্টগ্রামে বড় বড় যত উন্নয়ন হয়েছে প্রত্যেকটার সঙ্গে আব্দুল্লাহ আল নোমান জড়িত। শ্রমিকদের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক, সেটা তিনি কখনও ছিন্ন করেননি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের সভাপতি সাঈদ আল নোমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজার সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।