‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনও নির্বাচন নয়’

 

খালেদা জিয়া (ছবি: সংগৃহীত)দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। তারা বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে, সে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে কোনও বাংলাদেশে কোনও নির্বাচন হবে না।’ বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রদল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার সু-পরিকল্পিতভাবে দেশে বিভেদ সৃষ্টি করে ফল ভোগ করতে চায়। আমাদের জন্য এটা পরীক্ষা। এই বিভেদ কাটিয়ে একত্রিত হয়ে গণতন্ত্র রক্ষায় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। খালেদা জিয়াকে ছাড়া এদেশে কোনও নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার পতাকা যেন অর্ধনমিত থাকে, সে জন্য তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান হত্যা এবং তারেক রহমান গ্রেফতার একই সূত্রে গাঁথা। ভিন্নভাবে দেখার কোনও কারণ নেই ।’

স্লোগানরত ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, ‘সরকারকে পতনের আন্দোলনের জন্য এই আবেগ এবং অনুভূতিকে জমা করে রাখতে হবে। বিভেদ তৈরি না করে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এক-এগারোর সরকার খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের শিকার তারেক রহমান। যারা বিএনপিকে ভয় পায়, তারাই এই ষড়যন্ত্র করেছিল। যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখতে চায় না, তারাই বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, ‘৫ জানুয়ারির মতো ভাগাভাগির অফার এলেও বিএনপি ভাগাভাগির নির্বাচনে যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচন চাই। আমরা রাতের আঁধারে ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন চাই না।’ ৫ জানুয়ারি যে কারণে বিএনপি নির্বাচনে যায়নি, সেই একই রকম অবস্থা থাকলে বিএনপি কখনোই নির্বাচনে যাবে না বলে জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার বক্তব্যকে প্রসঙ্গ করে স্থায়ী কমিটির এই নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতা আছেন যারা আগে থেকেই খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছেন, তার মামলা চালাচ্ছেন, তার জামিন নিয়ে নির্বাচন করছেন।’ তিনি বলেন, ‘যা বলেন একসঙ্গে বলেন। খালেদা জিয়া যা বলেন, তার কথা শুনে, সেভাবে কথা বলেন। অকারণে নেতাদের বিভ্রান্ত করবেন না, হতাশ করবেন না।’

গয়েশ্বর আহ্বান জানান, ‘আমরা একসঙ্গে কথা বলব, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়, খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন নয়।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব হাসান বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারতে যাচ্ছেন কিসের প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে, তা ছাত্রসমাজ জানতে চায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনও চুক্তি হলে, সেখানেই থাকবেন। এদেশে আর আসবেন না।’ ছাত্রদল সভাপতি যোগ করেন, ‘তারেক রহমানকে বিদেশে রেখে এবং খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনও নির্বাচন হবে না।’

রাজিব আহসানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গাজীপুর বিএনপির জেলা সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপি নেতা শহিদুজ্জামান চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রদলের সিনিয়র সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন প্রমুখ।

/এসটিএস/এমএনএইচ/