‘মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে চাইছে না’

জাতীয় সংসদ

মানুষ এখন ব্যাংকে টাকা রাখতে চাইছে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম। তিনি বলেন, ‘মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে চাইছে না। তাহলে টাকা কোথায় যাবে? চলে যাবে মাটির নিচে। মাটির নিচেও সমস্যা। মাটির নিচের সম্পদও নাকি সরকারের।’

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকে আমানতের ওপর আবগরি শুল্ক আরোপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি একথা বলেন।

জাতীয় পার্টির সহযোগিতার কথা আওয়ামী লীগকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই এখন নৌকায় উঠে পড়েছে। এখন নৌকা ডুবন্ত। এই নৌকা দিয়ে দেশ এগিয়ে নিতে পারবেন না। অর্থনীতিও এগিয়ে নিতে পারবেন না। লাঙল লাগবে। তিনবার আপনাদের লাঙল দিয়ে সাহায্য করেছি। কিন্তু আপনারা ভুলে যান। আরও লাগলে নেন। আমরা সবসময় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।’

তার অভিযোগ, ‘নানা ভৌতিক প্রকল্পে এখন তো মুড়ি-মুড়কির মতো টাকা বরাদ্দ হয়। বলা হয়, টাকা লাগলে দেবে গৌরী সেন। প্রশ্ন করলে বলা হয়, ওরা উন্নয়ন চায় না। মাথাপিছু আয় নিয়ে আমরা ভুলের স্বর্গে বাস করি। এখন যদি বিল গেটসকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেন তাহলে এটা অনেক বেড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পগুলো মেগা জটে পড়েছে। আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুই বছরেও এসব প্রকল্প শেষ হবে বলে মনে হয় না। পদ্মা সেতু ছাড়া অন্য প্রকল্পগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে।

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর বলেন, আবগারি শুল্ক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমস্যা থাকলে সমাধান হবে। এক লাখ টাকা রাখলে ৫০০ টাকা থেকে আবগারি শুল্ক ৮০০ টাকা করেছেন। একলাখ টাকা একমাস রাখলে পুরো টাকা পাওয়া যাবে না-এটা যেভাবে প্রচার হয়েছে তাতে এই শুল্ক কমিয়ে দেওয়া হলেও সরকারের যে ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে তা পূরণ হবে কি?

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন এক লাখ টাকা যাদের আছে তারা ধনী। এই বক্তব্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য। সরকারের জন্য কতটুকু লাভ বয়ে আনবে দেখা দরকার। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের সব ব্যাংকে চুরি হয়। কিন্তু আমাদের মতো সাগর চুরি হয় কিনা। 

ফিরোজ রশীদ বলেন, মদ-গাঁজা-বিড়িতে আবগারি নেবেন। এখন আমার আমানতের ওপর ধরলেন। কেন ব্যাংকে টাকা রাখবেন? ‘৭০ সালে বঙ্গবন্ধু ছোট নৌকা শুধু আওয়ামী লীগ নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এখন তো নৌকা বড় হয়েছে। কিন্তু ডুবন্ত। আস্তিক-নাস্তিক-বামপন্থী-চরমপন্থী-হাইব্রিড সব উঠিয়েছেন। ত্যাগী আওয়ামী লীগাররা এখন নেই। নৌকা ডুবুডুবু।

তিনি বলেন, মাননীয় স্পিকার আপনি আমাদের বিরোধী দল মনে করতে পারেন। আমাদের কেউ বিরোধী দল মনে করে না। আমাদের সবাইকে পুতুল বানিয়ে ফেলেছে। পুতুলের মতো নাচি-খেলি। সামনে নির্বাচন। জনগণের একটু মনোভাব নিয়েন। সামনে যারা আছে তারা সব না। অন্য মানুষের কথা শুনবেন।

তিনি বলেন, সব টাকা খরচ করে এখন আইছেন বৈধতা নিতে। এটা অনৈতিক, অসাংবিধানিক। অর্থমন্ত্রী সব জনগণকে পুতুল মনে করছেন। ১৬ কোটি মানুষ পুতুলের মত বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। বোধ শক্তি নেই। নাহলে এই ধরনের বাজেট আসে?

/ইএইচএস/এসটি/টিএন/