খালেদার জামিন প্রক্রিয়া রবিবার শুরু হবে: মির্জা ফখরুল

 

 

 

 

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মির্জা ফখরুলদুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ড পাওয়া খালেদা জিয়ার জামিনের প্রক্রিয়া রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ আশার কথা জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশের আইন অনুযায়ী জামিন পেতে হাইকোর্টে যেতে হবে। সেই সঙ্গে তার জামিন চাইতে হবে। যেহেতু কোর্ট  শুক্রবার ও শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি ও ১০ ফেব্রুয়ারি)  বন্ধ, আমরা আশা করছি, আগামী রোববার-সোমবারের মধ্যে কাগজপত্র পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

রায়ের সার্টিফাইড কপি পাওয়া না-পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমাদের আইনজীবীরা জানেন। তারা বলছেন যে, এটা সম্ভব। রবিবার-সোমবারের মধ্যেই আমরা এটার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো।’

ঠিক এই মুহূর্তে চেয়ারপারসনের কী পরিস্থিতি, আপনারা কি জানতে পেরেছেন—এ প্রশ্নের জবাবে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘সবাই যা জানেন, আমিও তাই জানি। পত্রপত্রিকায় যা দেখছি, খবর যা পেয়েছি, সেটা হচ্ছে— উনাকে পুরনো সেন্ট্রাল জেলের সুপারের ঘরে রাখা হয়েছে। তাছাড়া আজ পরিবারের সদস্যরা গিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি।’

খালেদা জিয়ার খাবার বা ওষুধপত্র নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব নিয়ে আমি সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারবো না। তবে আমি আশা করছি এবং  আমাদের প্রত্যাশা, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দুই বারের বিরোধী দলীয় নেত্রী, জনপ্রিয় ও বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা, সুতরাং তার যেটা প্রাপ্য, সেটাই পাওয়া উচিত।’

খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দল এবং সাধারণ মানুষদের প্রতি আপনাদের কী আহবান থাকবে? এর জবাবে বিএনপ’র  এই  নেতা বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসন শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন নয়, তিনি ষোল কোটি মানুষের নেতা। তার রাজনৈতিক জীবনটাই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের জীবন। উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাকে এভাবে একটা মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করে এবং এখন তার বিরুদ্ধে যেসব প্রচারণা করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে, আমরা এটাতে শুধু লজ্জিত হচ্ছি না, দু:খিত হচ্ছি না; এটাকে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করিনি, আওয়ামী লীগের মতো একটি পুরোনো রাজনৈতিক দল এই ধরনের আরেকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য হীন পন্থার আশ্রয় নেবে।’

তিনি বলেন, ‘নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি (খালেদা জিয়া) নিজেই বলে গেছেন, আপনারা শান্ত থাকবেন। আপনারা ধৈর্য হারাবেন না। এবং আমার মুক্তির জন্য বা গণতন্ত্রের জন্য, আসন্ন নির্বাচনের জন্য আমাদের যে আন্দোলন তা হবে শান্তিপূর্ণ, সম্পূর্ণ অহিংস; নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক উপায়ে।’

‘সংশয়ের কোনও কারণ নেই, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাবসেন্স অফ চেয়ারপারসন। তিনি চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন।’

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে কী জানিয়েছেন জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান অবস্থা আমরা তাদের জানিয়েছি। আপনাদের সঙ্গে তো প্রতিদিন দুই-তিনবার করে কথা হয়। উনাদের সঙ্গে আমাদের বছরে একবারও কথা হয় না।’

এর আগে শুক্রবার বিকালে সোয়া ৪ টার দিকে চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

ওই বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।