ছিল প্রশ্নবোধক চিহ্ন, রায়ে হয়ে গেলো দাঁড়ি: নজরুল ইসলাম খান

প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন নজরুল ইসলাম খানজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আদালতে বক্তব্য রাখার সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রশ্ন রাখলেও রায়ে তার বক্তব্যকে স্বীকারোক্তিমূলক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, “আদালতে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই সরকার ব্যাংক লুট করেছে, শেয়ার বাজার লুট করেছে। সরকারি দলের নেতারা বিদেশে সেকেন্ড হোম করেছেন। এসবের কোনও তদন্ত নেই, বিচার হয়নি। আর দোষ করেছি আমি?’ তিনি তো প্রশ্ন রেখেছিলেন। আর রায়ের পাতায় দেখা যায়, সেই প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে গেছে দাঁড়ি চিহ্ন। উনি নাকি দোষ শিকার করেছেন।”
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুব জাগপা আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি নাকি ডিভিশন পাবেন না। ডিভিশন পেতে হলে যেসব যোগ্যতা থাকতে হয়, তার সবগুলোই তার আছে। তিনি দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। কিন্তু তাকে চার দিন ডিভিশন ছাড়া রাখা হয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘খালেদার বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। দুর্নীতির দায়ে তাকে সাজাও দেওয়া হয়নি। তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে পেনাল কোর্টের ৪০৯ ধারায়। সেখানে বলা হয়েছে, তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। তিনি কী বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন? তিনি তো কোনও অপরাধ করেননি, চেকে সই করেননি। তিনি ট্রাস্টের কোনও সদস্যও নন, কর্মকর্তাও নন। তাকে অভিযুক্ত করা যায় কী করে? আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনে উচ্চ আদালতে আমরা সুবিচার পাবো।’
ট্রাস্ট পরিচালনায় কোনও ত্রুটি হয়ে থাকলে তার জন্য ট্রাস্ট আইনে বিচার না করে দুর্নীতি দমন আইনে কেন বিচার করা হলো— সেই প্রশ্ন রাখেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমাদের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দিয়েছিল, আর আজকের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দিয়েছিল ১৫টি মামলা। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের যুক্তরাজ্য নেতা বিচারপতি মানিক ও আরও একজন বিচারপতিকে দিয়ে সব মামলা থেকে খালাস নিয়ে নিলেন।’ সামরিক স্বৈরশাসকদের সঙ্গে যারা আঁতাত করে, তাদের পক্ষে গণতন্ত্র রক্ষা সম্ভব না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক বক্তব্য রাখছেনপ্রেসক্লাবের সামনের অন্য এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, ‘আমরা জেনেছি, রায়ের চার দিন আগে বিচারিক আদালতের চার জন বিচারক সচিবালয়ে গেছেন। সেখান থেকেই রায়ের ড্রাফট সরবরাহ করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়ার এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বেগম জিয়াকে কাল্পনিক মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। আজ খালেদাকে কারাগারে রেখে আপনি (শেখ হাসিনা) নির্বাচনি প্রচারণায় নেমেছেন। এটাই কি আপনার গণতন্ত্রের নমুনা?’
আরও পড়ুন-
দেশ উন্নয়নশীল হলে কী হবে?
‘ডিজিটাল ডিপ্লোম্যাসি’র বেহাল দশা