‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হবে না’

প্রেসক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠান

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনও নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘যে মামলায় খালেদাকে জেলে রাখা হয়েছে, সে মামলাটি সম্পূর্ণ জাল নথির ওপর তৈরি। মামলাটি আইনি নয়, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। আজ তাকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া ছাড়া কোনও নির্বাচন হবে না। সংসদ ভেঙে নির্বাচন আদায় করা হবে।’

শুক্রবার (৯ মার্চ) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক ওলামা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন মোশাররফ হোসেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা মহানগর ইসলামী ঐক্যজোটের উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এসময় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ কঠিন ও অন্ধকার জীবন পার করছি। গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দি। ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোট দিতে পারেনি। এখন তাদের প্রশ্ন, এবারও কী তারা ভোটা দিতে পারবে না?’

তিনি আরও বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট হয়েছে। ১৫৪টি আসন বিনা ভোটে নির্বাচিত। জনগণ ভোট দেয়নি। পৃথিবীর কোনও স্টান্ডার্ডের আওতায় এই নির্বাচন পড়ে না। এরা যেহেতু জনগণের প্রতিনিধি নয়, সেজন্যই তারা আজ স্বৈরাচার হয়ে পড়েছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হচ্ছে- জনগণের ভোটে, জনগণের মধ্য থেকে এবং জনগণের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি। এরা (আওয়ামী লীগ) এর কোনও ক্যাটাগরিতে পড়ে না। আজ শেয়ারবাজার লুট, ব্যাংক লুট, আলেম-ওলামা হত্যা, নির্যাতন, গুম, হত্যা-খুন ও ঢালাওভাবে মামলা করা হচ্ছে। এর কোনও জবাবদিহিতা নেই।’

নির্বাচন বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আবার একটা নির্বাচন আসছে। তারা (আওয়ামী লীগ) ভীত। জনগণ যদি আবার ভোট দিতে পারে, তাহলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও রিপোর্ট দিয়েছে- নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে ৩০-৪০টি আসনও পাবে না। যদি ক্ষমতায় যেতে না পরে তাহলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। জনগণকে অপকর্মের জবাব দিতে হবে। সেজন্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছে না।’

বিডিআর হত্যা মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সিভিল ও আর্মি প্রশাসন পৃথক দু’টি তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে। সিভিল প্রশাসনের দেওয়া রিপোর্টটির আংশিক প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আর্মির রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়নি। এটা কি একদিন প্রকাশ হবে না? সেদিন তো প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’

আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেক আলেম-ওলামা হত্যা করা হয়েছে। আলেম হত্যার বিচার হবে। যাদের পরিবারের সদস্য হত্যার শিকার হয়েছেন তারা কি বিচার চাইবেন না? ১০ টাকায় চাউল খাওয়াবেন বলে ভোট নিয়েছেন কিন্তু সেই চাল আজ ৬০ টাকা।’

বিদ্যুতের দাম প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির সময়ে বিদ্যুতের দাম ছিল প্রতি ইউনিট আড়াই টাকা। আজ সেই বিদ্যুতের ইউনিট ১০ টাকা।’

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব বলেন, ‘ভোটবিহীন শেখ হাসিনার মনে শান্তি নেই। আজ বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দলের মহাসচিবের সামনে থেকে উনার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের পুলিশ বাহিনী এমন আচরণ করতে পারে না।’