সরকারকে পরাজিত করতে জাতীয় ঐক্যের ডাক মির্জা ফখরুলের

আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরজাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘দেশবাসীর প্রতি আমার আবারও আহ্বান থাকবে,যে ভয়াবহ দানব সরকার আমাদের সব কিছু লুটে নিয়ে যাচ্ছে তাকে পরাজিত করতে আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। একইসঙ্গে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’ 

শুক্রবার (১১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘দেশনেত্রীর রাজনীতি, সংগ্রাম ও সফলতার ৩৪ বছর’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্স সেন্টার আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আলোকচিত্রী বাবুল তালুকদার।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারাগার থেকে খালেদা জিয়া যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন , তাতে আমরা জনগণের ঐক্য সৃষ্টি করে আমাদের ওপর যে ভয়াবহ দুঃশাসন চেপে বসে আছে তা সরাতে পারবো। আমি অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলবো, মালয়েশিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখুন। দুর্নীতি করলে, জনগণ ও গণতন্ত্রের বাইরে চলে গেলে সব শক্তি দিয়েও জনমতকে যে প্রতিহত করা যায় না তা প্রমাণ করেছে মালয়েশিয়ার জনগণ।’ 

রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনকে কারাগারে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর তা স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট শুনানি করছেন। তাকে কারাগারে আটকে রেখে আবারও একদলীয় একটি নির্বাচন করার চক্রান্ত করছেন আওয়ামী লীগ।’  

সরকার নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতিদিন খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি যারা নির্বাচনের এজেন্ট হবেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীরা নির্বাচনের প্রচারণার কাজ করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ পুলিশকে দিয়ে গোটা নির্বাচন মাঠ দখল করে নিয়েছে। কালও আমাদের প্রার্থী মঞ্জুর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন এরপরও শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনি মাঠে থাকবো এবং জয়লাভ করবো।’  

পরাজয়ের ভয়ে আওয়ামী লীগ খুলনায় নির্বাচনি মাঠে নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখন মাঠে আছে পুলিশ। আজ এ রাষ্ট্রকে শেখ হাসিনা পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলেছে। আইনশৃঙ্খলা- প্রশাসন শেষ হয়ে গেছে। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অনেক আছেন যাদের কথা বলতে ও লিখতে দেওয়া হচ্ছে না। বলেছে চাকরি চলে যাবে।’  

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বারবার খালেদা জিয়ার নাম উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালনের ৩৪ বছর অতিক্রম করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য মানুষের ভোট,বেঁচে থাকার, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার পুরো জীবন সংগ্রাম করে চলেছেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের ৯ মাস যুদ্ধ চলাকালে তাকে শিশু সন্তানদের নিয়ে নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে তার যে অবদান তা কোনোভাবেই খাটো নয়। তিনি নির্যাতিত এবং বন্দি ছিলেন।’ 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপেদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।  

আরও পড়ুন- রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার ৩৪ বছর