নির্বাচন নিয়ে বিএনপি বহু খেলা খেলেছে: আমু

আমির হোসেন আমু (ফাইল ফটো)আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, আজকে তারা (বিএনপি) নির্বাচনের কথা বলে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি বহু খেলা খেলেছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচনের নাম হয়েছিল— ‘এক হোন্ডা, দুই গুণ্ডা, দুই স্টেনগান’। পোলিং বুথে কোনও ভোটার থাকতো না। ব্যালট বাক্স হাইজ্যাক করে নির্বাচন করতো। তারাই আজ  নির্বাচন নিয়ে সততার কথা বলে।

বৃহস্পতিবার (১৭ মে) বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের স্মৃতি কম হলেও এত কম নয় যে, তাদের দুষ্কর্মগুলো ভুলে যেতে সক্ষম হয়েছে?’

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার ওপরে আল্লার রহমত ছিল, আছে এবং থাকবে। এতে এ জাতির অভ্যুদয় ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু বলতেন— ‘এদেশের মত ধর্মপরায়ণ মানুষ পৃথিবীতে আর নাই।’ আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে এর সত্যতা পেয়েছি। দেশের মানুষ ধর্ম পালন করে বলেই বঙ্গবন্ধু তাবলিগ জামাতকে জায়গা দিয়েছেন। আল্লাহর রহমত আছে বলেই শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করেও পারে নাই। শেখ হাসিনা ছিলেন বলেই দেশের সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশকে আকাশচুম্বী উন্নয়নের পথে নিয়ে গেছেন। যারা দেশের অর্জনকে খাটো করে, তারা দেশ প্রেমিক নয়. দেশদ্রোহী।’

তিনি বলেন, ‘১৯৮১ সালে এক চরম মুহূর্তে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন। আসার পর বিপদসঙ্কুল পথ। প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা ধরা, প্রায় প্রতিটি মুহূর্তেই তার মৃত্যু ঘটছে। আর দলের ভেতরে ষড়যন্ত্র। এ সময়ে তিনি ভারসাম্য রক্ষা করে প্রমাণ করেছেন, তিনি অকুতোভয়ী সৈনিক হিসেবে তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।’

উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘স্যাটেলাইট থাকা বিশ্বের ৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। নিউক্লিয়ার অ্যাগ্রিমেন্টেও আমরা রয়েছি। বিশ্বের অন্যতম হাইয়েস্ট গ্রোয়িং ইকোনমির দেশ এখন বাংলাদেশ। এটা বৈশ্বিকভাবে প্রমাণিত। সেদিন আর দূরে নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ।’
বিএনপির সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, ‘কোনও পত্রপত্রিকা খুলনার নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, কিন্তু বিএনপি করেছে। এটা তাদের অভ্যাস। বিএনপি একটি ‘লিমিটেড’ দল। খুলনার নির্বাচন আবারও প্রমাণ করেছে— আমরা একত্রিত থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। দারিদ্র পীড়িত বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশে রূপান্তর হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দমন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। আগামীতে ২১ আগস্ট হামলারও বিচার করা হবে। বাংলাদেশের আশীর্বাদ শেখ হাসিনা, তাকে ছাড়া বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুলনার জন-রায়কে যারা প্রত্যাখ্যান করেছে, আগামী নির্বাচনেও জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি খালি কলসি। খালি কলসি নড়াছড়া করে বেশি। আমাদের ভরা কলসি, নড়াছড়া করে না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কাজই হচ্ছে মিথ্যাচার করা।তারা জনগণের কাছে নালিশ করে না। কারণ, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এ কারণে তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করে। মিথ্যাচার ও ভাঙা রেকর্ড বাজাতে বাজাতে তারা গভীর খাদে পড়বে, যা থেকে আর উঠতে পারবে না।’

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল হানিফ বলেন, ‘এই বাংলাদেশে কোনও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের ঠাঁই নাই। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চেয়েছে, বলেছে আমাদের নির্বাচিত করুন। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবো। খুলনার নির্বাচনে জনগণ আবারও প্রমাণ করেছে, মানুষ বিএনপিকে চায় না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের নেত্রী জেল থেকে বের হোক, মানুষ চায় না। তারা আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সঙ্গে থাকতে চায়।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য  এইচটি ইমাম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ,  উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। অলোচনা সভা পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।