স্বৈরাচার সরকারকে লাল কার্ড দেখাতে জনগণ বদ্ধপরিকর: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী (ফাইল ছবি)বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জনগণ বর্তমান স্বৈরাচার সরকারকে লাল কার্ড দেখাতে বদ্ধপরিকর। সরকারের আস্ফালন উপেক্ষা করেই জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে।’ শুক্রবার (২২ জুন) সকালে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভীর ভাষ্য, ‘দেশজুড়ে বিরোধী দল নিধনের কর্মসূচি থামছে না। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলতে সরকারের পরিকল্পনা ও নীলনকশা অব্যাহত আছে। তবে সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে।’
বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দূরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে সুপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রিজভীর।
এই রাজনীতিবিদের কথায়, ‘ভোটারবিহীন সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই দেশজুড়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন ও গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমসহ মানুষের বাকস্বাধীনতা, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।’
রিজভী বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে বারবার উত্থাপিত নাগরিক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়েই বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরালো আওয়াজ উঠছে। অথচ মনুষ্যত্ব ও বিবেক বিসর্জন দিয়ে দেশজুড়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, গুপ্তহত্যা, অপহরণের অমানবিক সন্ত্রাসী পরিকাঠামো তৈরি করেছে বর্তমান সরকার।’

চিকিৎসার অভাবে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। দিনের পর দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা না পাওয়ায় খালেদা জিয়ার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে তাকে জানিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভীর অভিযোগ—গত কয়েকদিনে বিএনপি ও বিরোধী দলের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারের পর এখন তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে নিশ্চিত ভরাডুবির ভয়ে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে ধানের শীষের সমর্থক ও ভোটারদের তাড়িয়ে গাজীপুর সিটিকে পরিণত করা হচ্ছে শ্মশানভূমিতে, যাতে সুচারুভাবে ভোটারবিহীন নির্বাচন সম্পন্ন করা যায়।

রিজভীর মন্তব্য, ‘আওয়ামী লীগের বিজয় নিশান নিশ্চিত হয় ভোট ডাকাতি ভোট সন্ত্রাস, জালভোট, ভোটকেন্দ্র দখল ও অবৈধ অস্ত্রের আস্ফালনের মাধ্যমে। আর চোখ বন্ধ করে থাকা দায়িত্বহীন নির্বাচন কমিশন হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে।’