গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় পুলিশ: রিজভী

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবীর রিজভীগাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান অন্তরায় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২৫ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) গাজীপুর সিটি করপোরেশনে যে ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেখানে জনগণ অবাধে পছন্দ অনুযায়ী তার প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে—এমন কোনও পরিবেশ এখনও দৃশ্যমান নয়। জনগণের মধ্যে ভোট নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা আরও গভীর হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ পর্যন্ত যতটুকু খবর আমাদের কাছে এসেছে, তাতে গাজীপুরে বাছাই করে দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ হলে ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে খুলনার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না’—প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘খুলনায় নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট সন্ত্রাসের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার বক্তব্যে সেটিই প্রমাণিত হলো। শুধু খুলনা মার্কা নয়, গাজীপুরে ভোট ডাকাতির সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়তে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইসি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।’

গতকাল (রবিবার) রাতে গাজীপুরে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৩ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, এ অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘রবিবার রাতে শত শত বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতার করা হয়েছে এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে।’ অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

‘সিটি নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ম্যাসেজ নেই’—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সর্বত্র সরকারের ম্যাসেজ প্রতিপালিত হচ্ছে অক্ষরে অক্ষরে। প্রতিটি লোকালয়ে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির কাজ খুব সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পাইকারি হারে গ্রেফতার, বাসায় বাসায় তল্লাশি, বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতাদের আটক, নতুন করে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা ডিবি পুলিশের আগ্রাসন, সরকারি দলের মেয়র প্রার্থী, মন্ত্রী ও নেতাদের নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গসহ সর্বোপরি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পুলিশের গাড়িতে করে প্রচারাভিযান ইত্যাদি ঘটনায় সরকারের ম্যাসেজটা কী, তা গাজীপুরের ভোটারদের বুঝতে বাকি নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ ।