বিএনপির সঙ্গে সরকারের সমঝোতায় আসতে হবে: মওদুদ





জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে কথা বলছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদবিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব না মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিএনপির সঙ্গে সরকারের সমঝোতায় আসতে হবে। আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সেদিনই হবে যেদিন খালেদা জিয়া মুক্ত হবে।’ শনিবার (৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি এই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। খুলনা এবং গাজিপুর সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে এই কমিশনের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। আমরা বারবার বলছি আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং এই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দল জড়িত নেই দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফূর্ত আন্দোলন। ১০০টা সরকারি চাকরির নিয়োগের মধ্যে ৫৬টি যদি কোটায় চলে যায় তাহলে থাকে কী? বাকি যে ৪৪ শতাংশ নিয়োগ পায় তার মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়। প্রধানমন্ত্রী ১১ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হবে। আমরা শুনে তার প্রশংসা করেছিলাম। কিন্তু ২৭ জুন তিনি আবার একই সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে। আমরা কিভাবে তার কথা বিশ্বাস করবো? প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাই যে কথা তিনি বলেছিলেন তা যেন রক্ষা করেন। এমনিতেই জনগণের অনেক বিশ্বাস আপনার ওপর থেকে চলে গেছে।’
গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরেও আমাদের চ্যালেঞ্জ এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক একটা জাতির জন্য আর কি হতে পারে? তাহলে কি এটা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র ? জাতি কি তাহলে ব্যর্থ হয়ে গেল? আজকে যে সংকট নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই তা গাড় হবে। আমাদের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সর্বদলীয় জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। হয় শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় আসতে বাধ্য করা হবে, আর না হয় অতীতে যে ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হয়েছে তা করতে হবে।’
দেশের উচ্চতম আদালতের আদেশকে অকার্যকর করার জন্য নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, ‘মিথ্যা মামলার ওপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাঁচ মাস হয়ে গেছে তিনি জেলে আছেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন। তারপরও আমরা তাকে মুক্ত করতে পারছি না। দেশের উচ্চতম আদালতের আদেশকে অকার্যকর করতে নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাহী বিভাগের কাজ করছে। দেশের মানুষকে বোঝাতে হবে উচ্চতম আদালতের জামিন আদেশ কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট বিলম্ব করে। আজকে খালেদা জিয়ার ব্যপারে এরকম হলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থায় আছেন তা বুঝতে বাকি থাকে না। কোথায় যাবে সাধারন মানুষ যদি আদালতে সুবিচার না পায়। আমরা চাই আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে। তবে এ পথে না হলে রাজপথ ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।’