‘আরেকটি ফরমায়েশি রায়ের দিন ধার্য করেছে নিম্ন আদালত’

রুহুল কবির রিজভীসরকারের হুকুমে আরেকটি ফরমায়েসি রায়ের দিন ধার্য করেছে নিম্ন আদালত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো ও মিথ্যা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না করেই সরকারের হুকুমে আরেকটি ফরমায়েসি রায়ের দিন ধার্য করেছে নিম্ন আদালত, যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং নিম্ন আদালতে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ।’

বুধবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

অসুস্থ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচার কাজ চলার বিধান পৃথিবীর কোনও দেশে নেই বলেও দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার বেআইনি খারাপ নজির সৃষ্টিকারী সরকার— যেমন বন্দুকের জোরে দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে ও পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং বিচারক মোতাহার হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার নজির সারা দুনিয়ায় খুঁজে পাওয়া যাবে না, তেমনি অসুস্থতাজনিত কারণে বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতে রায় দেওয়া হলে তাও হবে পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।’

রিজভী আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করতে এবং মানুষকে বোবা বানিয়ে দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর এবার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার নামে আরেকটি ভয়ঙ্কর আইন করতে যাচ্ছে সরকার। গত পরশু (মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খসড়া আইনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপারে বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রকাশ করলে তিন বছরের জেল ও পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা। টকশোতে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করলেও একই সাজা।’

বর্তমান সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও ভয়াবহ দুঃশাসন ও মহাদুর্নীতিতে নিমজ্জিত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘‘এই কারণে তারা সবসময় আতঙ্কে ভোগে কোনও গণমাধ্যমে তাদের মহাদুর্নীতির মহাকেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হয়ে পড়ে। ভোটারবিহীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার গণমাধ্যমের সামনে বলেছেন, ‘কিছু মিডিয়া ডকুমেন্টস তৈরি করে বসে আছে, আমাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার জন্য।’ সরকার যদি এতই স্বচ্ছ হয়ে থাকে, তাহলে সেসব ডকুমেন্টের জন্য এত শঙ্কিত কেন?’

রিজভী বলেন, ‘দুর্নীতির খবর চেপে রেখে নিজেদের নিরাপদ করার জন্যই কি মিডিয়ার মুখ বন্ধ করতে একের পর এক ভয়ঙ্কর কালো আইন করে যাচ্ছে সরকার?’

বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের ‘কালো আইন’ সম্প্রচার নীতিমালার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।