ঐক্যফ্রন্টের সমান্তরালে সক্রিয় থাকবে ১৪ দল





১৪ দলীয় জোট

জোটে নতুন শরিক নেওয়ার প্রশ্নে অনাগ্রহী হলেও এখন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমান্তরালে মাঠে সক্রিয় থাকবে ১৪ দল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটটির নীতিনির্ধারকরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জোটের কার্যক্রম ও কর্মসূচি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উদ্দেশ্য, কোনও অশুভ শক্তিকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ না দেওয়া।
১৪ দলের সূত্র জানায়, ঐক্যফ্রন্টকে খুব একটা গুরুত্ব না দিলেও এই জোট যাতে জনগণকে বিভ্রান্ত না করতে পারে সেজন্য আন্তঃবৈঠক বাড়ানোর পাশাপাশি রাজপথেও নিয়মিত কর্মসূচি দেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবেই গত এক সপ্তাহে তিন বার বৈঠক করা হয়েছে। এমনটাই চলবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত।
গত শনিবার (১৩ অক্টোবর) ‘জাতীয় ঐক্যে’র ডাক দিয়ে বিএনপি, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না এবং জেএসডির আ স ম আব্দুর রব মিলে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে নতুন জোট গঠন করেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) জোটটির প্রথম বৈঠক হয়েছে। এ মাসেই জেলায় জেলায় সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি দেওয়ার কথাও ভাবছে ঐক্যফ্রন্ট। এ অবস্থায় নিজেদের কার্যক্রম ও জোটগত কর্মসূচি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা।
সূত্র জানায়, ১৪ দলকে মাঠে রাখার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত সোমবার (১৫ অক্টোবর) গণসমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামী ২৯ অক্টোবর রাজধানীতে গণসমাবেশ করার কর্মসূচি দেওয়া হয় এদিন। এছাড়া ২৫ অক্টোবর যশোরে সমাবেশ এবং ২৬ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গায় সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত হয়। তবে যশোরের সমাবেশ পিছিয়ে যেতে পারে বলে ১৪ দল সূত্র জানায়। অবশ্য পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অতিথি করে ঢাকায় একটি বড় ধরনের জনসভা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি।
9cc3622ba8204e3a7e31007901967a0a-5bc1e79f1dd76

এ বিষয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জোটের কলেবর বাড়বে না, কিন্তু কার্যক্রম বাড়বে। কোনও অপশক্তির কুমতলব এ দেশে বাস্তবায়ন হতে দেবে না ১৪ দল। তাদের ষড়যন্ত্র বাংলার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দেওয়া হবে।’
১৪ দলের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৪ দলীয় জোটকে আরও সক্রিয় রাখতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এখন থেকে আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি রাজপথেও নিয়মিত উপস্থিতি জানান দেওয়া হবে। এ মাসেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বড় কর্মসূচি পালিত হবে। কোনও অশুভ শক্তিকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ দেবে না ১৪ দল।’
এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন আদর্শিক জোট ১৪ দলে আর শরিক বাড়ছে না বলে বুধবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। তবে জোটের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার পক্ষে মত দেন শরিক নেতারা। বৈঠকে তারা বলেন, নির্বাচনের নামে অসাংবিধানিক দাবি তুলে মাঠের পানি ঘোলা করতে চাইছে ঐক্যফ্রন্ট। যারা এর উদ্যোক্তা তারা পরীক্ষিত গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি। কেননা, জাতীয় ঐক্যের প্রশ্ন তখনই আসে যখন বড় ধরনের কোনও জাতিগত ইস্যু আসে। কিন্তু এখন কোনও ইস্যু ছাড়াই জাতীয় ঐক্যের নামে ষড়যন্ত্রে মেতেছে এই শক্তি। এই জোটকে প্রতিহত করতে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা।
১৪ দলের বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান বলেন, ‘১৪ দলীয় জোটকে আরও গতিশীল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জোটে আর শরিক না বাড়ানোর বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে। তবে কোনও দল এ জোটে আসতে চাইলে নির্বাচনি জোট মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের জোটভুক্ত করা যেতে পারে।’