প্রহসনের ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশন সরকারকে সহযোগিতা করছে: রিজভী

রুহুল কবির রিজভীবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দলবাজ নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কখনোই সাহসী হতে পারবেন না। মূলত জাল-জোচ্চুরি-প্রহসনের ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’

শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১২টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সুস্পষ্টভাবে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি অমান্য করলেও নির্বাচন কমিশন তাতে কর্ণপাত না করে নির্বাচন নিয়ে সরকারের গোপন মিশনগুলোর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছে। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন কমিশনের পক্ষে বিধিভঙ্গকারী প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কার্যত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে এখনও সময় আছে। নিজেদের সরকারের ছাতা থেকে বের করে জনগণের ছাতার তলে আসুন। জনগণের হরণকৃত ভোটারাধিকার ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচনের চিন্তা করে থাকেন, তবে আপনারা রেহাই পাবেন না। কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে আপনাদের।’

প্রধানমন্ত্রী নিজে ‘নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ’ করে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে দিচ্ছেন না দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রহমানসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করেছেন, যা উসকানিমূলক। তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। আচরণবিধির ১১ ধারায় বলা আছে, কোনও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের মনোনীত ব্যক্তি উসকানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান করতে পারবেন না।’

রিজভী দাবি করেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর রাষ্ট্রীয় ভবন গণভবনে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার প্ল্যান করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৮ লাখ কম্বল দিতে যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের নামে কম্বলসহ ত্রাণসামগ্রী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বিতরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

অভিযোগ দিলে নির্বাচন কমিশন শুধু আশ্বাসে সীমাবদ্ধ রাখে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘কমিশনের গতি-প্রকৃতি লক্ষ করলে বিস্মিত হতে হয়, সত্যি বিচিত্র নির্বাচন কমিশন।’