যেকোনও মূল্যে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা ঐক্যফ্রন্টের

 

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকজাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেকোনও অবস্থাতেই নির্বাচনে থাকবে বলে জানিয়েছেন ফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেকোনও অবস্থাতেই নির্বাচনে থাকবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করবে।’

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা বিভিন্ন মিডিয়ায় কটূক্তি করছেন, এটা মোটেও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তার চরিত্র হনন করা হচ্ছে। ড. কামাল হোসেন বর্তমানে দেশের একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সত্যিকার অর্থে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে যারা কথা বলছেন, তাদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চলছে। গুম করে দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করছেন ড. কামাল হোসেন। তার চরিত্র হনন ও তাকে হেয় করার প্রতিবাদ করেছি আমরা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একজন প্রথিতযশা আইনজীবী। তিনি এই সরকারের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে একটি মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। জামিন দেওয়া হচ্ছে না। জামিন তার প্রাপ্য। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের পরে যে অবস্থা, সেটা পর্যালোচনা করেছি। আমরা দেখেছি এই স্বৈরাচারী সরকার অত্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনগণের অধিকার হরণ করছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের যে অপচেষ্টা চলছে, সেটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর চড়াও হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে। একইভাবে গণতান্ত্রিক কর্মীরা যেন মাঠে না থাকতে পারে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তার জন্য পুরনো কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। এমনকি মনোনয়নপত্র দাখিলের পরও গ্রেফতার চলছে। তিনজন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুতরাং নির্বাচনের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তার ন্যূনতম অবকাশ নেই। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। অবিলম্বে গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে, যেটা প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন তফসিল ঘোষণার পরে আর কোনও গ্রেফতার করা হবে না। দুঃখজনকভাবে সেই গ্রেফতার চলছে। অবিলম্বে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

ঘরে ঘরে যে তল্লাশি চলছে, তা বন্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় এই নির্বাচনে যে পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তার সকল দায়-দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে।’

শনিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন ড. কামাল হোসেন।

আসন বণ্টন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসন বণ্টনের হিসাব ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পরে পাবেন। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এই বিষয়ে জানানো হবে।’

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, কাদের সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, আবদুল মালেক রতন, শহীদুল্লাহ কায়সার, শহীদুল ইসলাম স্বপন, হাবিবুর রহমান তালুকদার ও ডা. জাহেদ উর রহমান।