শনিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় মতিঝিলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জামায়াতের ২২ জন প্রার্থীকে ধানের শীষের প্রতীক দেওয়া হবে এ বিষয়টি আমি জানতাম না। প্রতীক দেওয়ার পরে আমরা বিএনপির কাছে এর ব্যাখ্যাও চেয়েছিলাম।’
লিখিত বক্তব্যে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘তাড়াতাড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল-ক্রটি হয়েছে তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে।’
জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন অনিচ্ছাকৃত ভুলক্রটি কিনা এবং জামায়াত ছেড়ে ঐক্যফ্রন্টে আসতে বিএনপিকে চাপ দেওয়া হবে কিনা সে প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি তো মনে করি, জামায়াতকে ছেড়ে আসতে বিএনপিকে চাপ দেওয়া হতে পারে।’
জামায়াতকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে বলেছি- এটা তো আমার জানাই ছিল না। তখন ওরা (বিএনপি) বললো না যে, জামায়াতের ২৫ জন না কতো। আমি যখন এখানে সম্মতি দিয়েছি (ঐক্যফ্রন্ট গঠন) তখন সেটা (জামায়াতকে ধানের শীষে মনোনয়ন) আমাকে জানানো হয় নাই। আমরা মতে, সেটাও একটা ভুল করা হয়েছে।
যদি বিএনপি জামায়াতকে না ছাড়ে তাহলে কী করবেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি বলে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না। যখন হবে তখন বলবো।
ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কিংবা গণফোরাম কোন পথে হাঁটবে এমন প্রশ্ন করা হলে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য একদম পরিষ্কার যে, জামায়াতকে নিয়ে আমরা রাজনীতি কখনও করি নাই, কোনোদিন করার কথা চিন্তাও করি নাই। যেটা বলা হয়েছে যে, করেছি। সেটা আমি সঙ্গে সঙ্গে বলেছি, এটা তো আমাদের বলা হয়নি যে, তারা (জামায়াত) থাকবে এটার মধ্যে। ভবিষ্যতে এই ব্যাপারটি পরিষ্কার। জামায়াতকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো না।’
একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে, হয়ে গেছে সেটা। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি করেছে, ৩০ ডিসেম্বর সেটার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে। ধারাবাহিকতা রক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে অর্থপূর্ণ নির্বাচন যেটাতে দাবি করতে পারেন যে, আমরা জনগণের আস্থা পেয়েছি সেটা করেন।’ এ বিষয়ে তিনি সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তারা চাইলে আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে আরেকটি ভালো নির্বাচন দিতে পারে। চাইলে আরও আগেও নির্বাচন দিতে পারে।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘আমরা কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট করেছি বিএনপির সঙ্গে, ২০ দলের সঙ্গে নয়। তারপরও জামায়াতের নাম যখন চলে আসছে যে, ২২ জন ওরা ধানের শীষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তখন বিএনপির মহাসচিবকে জানিয়েছি। তিনি তার দলের মিটিংয়ে তা উত্থাপন করেছেন। তারা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ দিয়েছেন যে, না জামায়াত হিসেবে কাউকে আমরা মনোনয়ন দেইনি, আমরা সব ধানের শীষ হিসেবে দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে অবিলম্বে এই ব্যাপারটা সুরাহা করার জন্য বলেছি। অবশ্যই আমরা জামায়াতের ব্যাপারটার সুরাহা চাই। আমরা জামায়াতকে নিয়ে আগেই রাজনীতি করিনি, এখনও করি না, ভবিষ্যতেও করবো না।’
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের নির্বাহী কমিটির সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজা কিবরিয়া, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মোকাব্বির খান, এসএম আলতাফ হোসেন, আওম শফিকউল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পথিকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।