জিয়ার নাম ও কবর নিশ্চিহ্নের ঘৃণ্যকর্মে মেতেছে সরকার: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী (ফাইল ফটো)সরকার জিয়াউর রহমানের ওপর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘সেজন্যই প্রতিহিংসা মেটাতে এখন শহীদ জিয়ার নাম ও কবরকেও নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্যকর্মে মেতে উঠেছে সরকার।’

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী দাবি করেন, ‘আওয়ামী ‘হিংসুক’ সরকার মানুষের ভালোবাসা আর আবেগের উৎস স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেরেবাংলা নগর থেকে জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেলার নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরুর পর এবার চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর দখল করতে মাঠে নেমেছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘গত সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনার সম্মতিতে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’কে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’-এ রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব এনেছেন ‘মিডনাইট ইলেকশনের’ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ছাত্রলীগের ক্যাডার আবদুর রহিম শামীম ও রাহুল দাশের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। ওই মানববন্ধন শেষে তারা জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলকে কালি লেপন করে, যা শুধু নোংরামিই নয়, কাপুরুষতা।’’

রিজভী বলেন, ‘শাসক শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাধীনতার ঘোষক ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার অর্থই হলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অপমান করা। আওয়ামী লীগ কখনও স্বাধীনতা চায়নি। স্বাধীনতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বিধা সর্বজনবিদিত।’
সরকার জিয়ার মাজার সরাতে টালবাহানা শুরু করেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, জোর করে কোনও কিছু চাপিয়ে দিলেও হৃদয়ের ওপর কোনও হুকুম চলে না। জিয়াউর রহমান কেবল কোনও ব্যক্তি নন, তিনি জাতীয়তাবাদী দর্শন ও আদর্শের পিতা। জনগণের প্রেরণার উৎস। কোনও ষড়যন্ত্র তাকে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে না।’
‘রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের পর বাকি জীবনটা পূর্বপুরুষের টুঙ্গিপাড়ার গ্রামে কাটাবেন’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, খুব ভালো খবর। জনগণ সেই মাহেন্দ্র দিনের ক্ষণগণনা শুরু করেছে, কবে আসবে সেই সুখবর যে আপনি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন। আমরা সেই তারিখটা জানতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে রিজভী আরও বলেন, ‘১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আপনি ঘোষণা করেছিলেন, ৫৭ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে আপনি অবসর নেবেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর আপনি ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছেন। আর আট মাস পরে আপনার ৭৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হবে। তাহলে আর কত বছরে ৫৭ বছর বয়স হবে? দেশের জনগণ আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনার কোনও কথার সত্যতা খুঁজে পায়নি।’