শীর্ষ নেতাদের জানিয়েই শপথ নিয়েছি: সুলতান মনসুর

সুলতান মনসুর (ছবি সংগৃহীত)
জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতাদের জানিয়েই শপথ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া এবং দল গণফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেওয়ার কারণে কোনও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে কী করবেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘সব কথার উত্তর দেব না এ কারণে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সেসব সিদ্ধান্তের সময় আমি ছিলাম, আমিও ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার নলেজেই আমি এটা করেছি। তারা তাদের সিদ্ধান্ত নেবেন আমি আমার ভূমিকা পালন করবো। দল হিসেবে তারা সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকুন। আর আমার ভূমিকার অপেক্ষায় থাকেন।’
মোকাব্বির খানের শপথ না নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ৩ তারিখে চিঠি দিয়েছিলাম। উনি (মোকাব্বির) কয় তারিখে দিয়েছিলেন সেটা উনি বলতে পারবেন। আমি জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ছিলাম। ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই সদস্য হিসেবে স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। নির্বাচনের পর থেকে আমি আমাদের ফোরাম এবং গণমাধ্যমে বলেছি- আমি অসুস্থ ছিলাম। আমি যাবো। সেই ধারাবাহিকতায় যা বলেছিলাম তা করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী। ৩০ ডিসেম্বর পর যা বলেছি তাই করেছি।’
ধানের শীষ প্রতীকে জয়ী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই সরকারি দলের প্রতিনিধিত্ব করছি না। ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেছি। ধানের শীষ এক সময় ছিল মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাপের মার্কা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা পর এই মার্কা হয়েছে বিএনপির। বর্তমানে এই মার্কা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা। কাজেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারক হিসেবে আমি ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচন করেছি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট্রের মধ্যে বিএনপি বড় দল স্বীকার করতেই হবে। তাদের নেতাকর্মীরা কাজ করেছে। তাছাড়া সব দলের লোকজন আমার নির্বাচনে কাজ করেছে। এই আসনে কখনও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জয়ী হয়নি। সংসদে আমি জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবো। যেহেতু নির্বাচন করতে হলে ইসির নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধিত দলের সদস্য হয়ে নির্বাচন করতে হয়, সেজন্য গণফোরামের তালিকায় তাদের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে আমাকে নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছিল। সেজন্য আমি অবশ্যই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকি সাতজনকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকি সাতজন আছেন, তাদের আহ্বান জানাবো শপথ নিয়ে ন্যায্য দাবি ও সমস্যার বিষয়ে সংসদে কথা বলেন।’ তাদের বক্তব্য সংসদের ভেতরে-বাইরে আলোচনা হতে পারে। আওয়াজ উঠতে পারে। 
ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর এক সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে দলে অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ার পর তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগ দেন। গত ৩০ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় বিএনপি। আর গণফোরামের দুটি মিলিয়ে ঐক্যফ্রন্ট পায় মোট আটটি আসন। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে তারা। নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। গণফোরামের প্রার্থীদের মধ্যে সুলতান মনসুর ছাড়াও সিলেট-২ আসন থেকে দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে বিজয়ী হন মোকাব্বির খান। সুলতান মনসুরের সঙ্গে মোকাব্বিরও শপথ নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করে বুধবার তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তিনি শপথ নেবেন না। দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন গণফোরামের সুলতান মনসুর