কেএম ওবায়দুরের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির কর্মসূচি

বিএনপিবিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার)। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ’৭৫-এর আগে তিনি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ’৭৮ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ’৮৬-তে তিনি দলটির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি একাধিকবার মন্ত্রীও ছিলেন। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি।     

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কেএম ওবায়দুর রহমান একজন গণসম্পৃক্ত জাতীয় নেতা হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রেখেছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনৈতিক জীবনে স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সব আন্দোলন-সংগ্রামে সোচ্চার থেকে তিনি আজীবন দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।’

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ৮টায় তার কবর জিয়ারত করবেন বিএনপির জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা। ওইদিন বেলা ৩টায় নগরকান্দার লস্করদিয়াস্থ শামা ডেইরি ফার্মের মাঠে হবে স্মরণ সভা। ২২ মার্চ বাদ আসর বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এছাড়া ২৪ মার্চ কেএম ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে হবে আলোচনা সভা। এতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

’৪০ সালের ৫ মে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় জন্ম ওবায়দুর রহমানের। তার বাবা মরহুম খন্দকার আতিকুর রহমান এবং মা রাবেয়া বেগম। স্থানীয় নগরকান্দা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন তিনি। এরপর ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপিও ছিলেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় একবার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দুইবার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২-৬৩ শিক্ষা বর্ষে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস নির্বাচিত হন।

’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন কেএম ওবায়দুর। ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান নগরকান্দা (সালথা-কৃষ্ণপুর) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

’৭৫-এর পট পরিবর্তনের পর ’৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগ দেন এবং জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন ওবায়দুর রহমান। বিএনপির সরকারের মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগে তিনি দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।