খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দেওয়া হচ্ছে: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘‘এখানে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা অপরাধ করার পরেও কখনও আদালত কর্তৃক শাস্তি পেলেও নির্বিঘ্নে মন্ত্রিত্ব করতে পারেন। বিরোধী দলের লোকদের হত্যা করার পরেও আওয়ামী ‘সন্ত্রাসীরা’ রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়ে যায়। অথচ দেশের জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটকিয়ে রেখে জামিনে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’

রবিবার (১২ মার্চ) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপিকে নাকি উপড়ে ফেলা হবে। গণতন্ত্র হত্যা করে রাজনীতিকে ধ্বংস করার হুমকি দিচ্ছেন তারা। আমরা সেই কথারই বাস্তবায়ন সর্বক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি। তবে অতীতে এই হুমকিদাতারা নিজেরা হারিয়ে গেছে।’

দেশে আইনের ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তির হুকুমই শেষ কথা বলে দাবি করে রিজভী আরও বলেন, ‘তবে হ্যাঁ, আইন আছে, প্রশাসন আছে, আদালত আছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে, কিন্তু সবই প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠবস করে।’

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যায় প্রভাবশালীদের জড়িতের আভাস ভেসে আসার কারণে সেই হত্যা মামলার আর অগ্রগতি হয় না বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

আওয়ামী লীগ কখনও গণতন্ত্রের অনুশীলনের কোনও ঐতিহ্য সৃষ্টি করতে দেয়নি বলে মনে করনে বিএনপির এই নেতা। রিজভী বলেন, ‘তারা একদলীয় মানসিকতা থেকে কখনও বের হতে পারেনি।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দাবি, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর সব মামলায় জামিন লাভ করে জেলগেট থেকে বেরুনোর সময় আবারও নুতন মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার আওয়ামী লীগের এক মহা আবিষ্কার। এটি একটি চরম বেআইনি পন্থা। এই পন্থা অবলম্বন করা হয় শুধুমাত্র বিরোধী দলকে পর্যুদস্ত করার জন্য।’

নুসরাত,শাহীনুর,তনু ও মিতুর মতো অসংখ্য নারী-কিশোরী প্রতিনিয়ত হত্যা হচ্ছে বলে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘হত্যা, নারী নির্যাতন-শিশু নির্যাতনের খবরে সংবাদপত্রের পাতা ভরে থাকে। এই ম্যান্ডেটহীন সরকারের কারণেই অসংখ্য মানুষের কান্না ও দীর্ঘশ্বাসে বাংলাদেশের বাতাস ভারী হয়ে আছে। দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী বলেছেন— দেশজুড়ে উন্নতির অন্তরালে আর্তনাদ চলছে। এরকম দুরাবস্থা বাংলাদেশে আর কখনও দেখা যায়নি।’ 

মানুষের চোখের পানিতে বাংলাদেশের মাটি কর্দমাক্ত বলে উল্লেখ করে রিজভী আরও বলেন, ‘সেই কাদামাটিতে শেখ হাসিনার উন্নয়নের রথ আটকে গেছে। আওয়ামী উন্নয়নের জিকিরে জনমনকে বিভ্রান্ত করা যায়নি। কারণ, তাদের উন্নয়নের আড়ালে যে রক্তউৎসব চলছে, তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। জনগণের সব অধিকার কেড়ে নেওয়া রাজনৈতিক দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’