জাতির প্রয়োজনে ঐক্যফ্রন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: নোমান

বক্তব্য রাখছেন আবদুল্লাহ আল নোমান

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে জাতির প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। শুক্রবার (১৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মুহাম্মদ আকরম খাঁ হলে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ’র স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামে একটি সংগঠন এই স্মরণসভার আয়োজন করে।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আমাদের প্রয়োজনে, জাতির প্রয়োজনে, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই বলে আমাদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সব কর্মসূচি এক হবে বিষয়টি তেমন নয়।’

পাটকল শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সারাদেশের পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি-ভাতার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। রাস্তায় নামার পরও এ নিয়ে তাদের সঙ্গে সরকারের কোনও কথা হচ্ছে না। কিন্তু সরকার কী করছে, যারা ব্যাংক লুট করেছে, যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের অর্থ, ঋণ সবকিছু স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখছে। এই সরকার গরিব, শ্রমিক, কৃষক, মেহনতী মানুষের সরকার নয়। আমরা চাই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘নাসিম সাহেবের মতো লোক বললেন ‘পয়সা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেনা যায়, এমনকি বিচার-আদালত কেনা যায়।’ আজকে হাইকোর্ট পারে না একটি রুল দিতে। অথচ খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়ে খুব বীরত্ব দেখাতে পারে। নাসিম সাহেব যখন স্বীকার করেছেন, তখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দল থেকে পদত্যাগ করে একটা দৃষ্টান্ত দেখান যে, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে আমি পদত্যাগ করলাম।’’

আওয়ামী লীগের আগের মর্যাদা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং শেখ মুজিবুর রহমানের যে আওয়ামী লীগ, সেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই আওয়ামী লীগ যায় না। সেই আওয়ামী লীগের একটা সম্মান ছিল, গৌরব ছিল, মর্যাদাবোধ ছিল।’

আলাল আরও বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে—বিষয়টি ঠিক না। বরং এটা থেকে আপনাদের প্রশংসা করা উচিত, বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা আছে। শেখ হাসিনার মতো মুখের ওপরে ধমক দিয়ে এখানে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় না।’

প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় নদীপথে আবহাওয়া খারাপ হয়। তখন নৌযানগুলো যেন বিভ্রান্ত না হয়, তার জন্য মোহনাগুলোতে লাইটহাউস থাকে। যেখান থেকে সিগন্যাল দেওয়া হয় এই পথে না, আপনি ওই পথে যাবেন। সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ সাহেব ছিলেন তেমনই একজন মানুষ।’

স্মরণসভায় শ্রমিকদল সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামসহ সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।